টাঙ্গাইলের বাসাইলে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ডাচ বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং বুথের কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ছাত্রলীগ নেতা সারোয়ার হোসেন সবুজের বাড়ি বাসাইল উপজেলার আইসড়া গ্রামে। তিনি ফুলকি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি।
টাকা ফেরতের দাবিতে গ্রাহকরা বৃহস্পতিবার বিকেলে আইসড়া বাজারের ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং বুথ ঘেরাও করে মিছিল সমাবেশ করেছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, তিন বছর আগে আইসড়া বাজারে এজেন্ট ব্যাংকিং বুথ চালু হয়। সবুজ সেই বুথের এজেন্ট। ব্যাংকিং নীতিমালা না মেনে তিনি উচ্চ মুনাফার লোভ দেখিয়ে এলাকাবাসীকে ব্যাংকে টাকা জমা রাখতে প্রলুব্ধ করেন।
কেউ কেউ টাকা তুলতে গিয়ে দেখেন, তাদের জমানো টাকা ব্যাংক হিসাবে নেই। এ বিষয়ে সবুজের কাছে জানতে চাইলে তিনি টাকা দেয়ার আশ্বাস দিয়ে গ্রাহকদের ঘোরাতে থাকেন। একপর্যায়ে গ্রাহকরা সালিশ বৈঠক বসান।
সালিশে সবুজ টাকা ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও সাতদিন আগে হঠাৎ ব্যাংক বন্ধ করে পালিয়ে যান।
মো. রাজু নামের এক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, তিনি পাঁচ লাখ টাকা জমা দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন। তার ধারণা এর সঙ্গে ডাচ বাংলার এজেন্ট ব্যাংক টাঙ্গাইল অফিসের কিছু কর্মকর্তাও জড়িত।
সাত দিন ধরে বন্ধ রয়েছে আইসড়া বাজারের ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং বুথ
ইতি খান নামের আরেক গ্রাহক বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করে ব্যাংকে টাকা রেখেছি। সে এমন প্রতারণা করবে বুঝতে পারিনি। প্রথম যখন টাকা জমা রাখি তখন মোবাইলে এসএমএস আসত। পরে আর টাকা জমা দেয়ার পর এসএমএস আসত না। এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে বলত, সার্ভার নষ্ট হয়েছে।’
প্রবাসী আফজাল হোসেন জানান, বিদেশ থেকে তিনি মা ও স্ত্রীকে টাকা পাঠাতেন। সবুজ তাদের উচ্চ হারে মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা জমা রাখতে বাধ্য করে। দেশে এসে টাকা তুলতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
ফুলকি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বাবুল নিউজবাংলাকে জানান, সবুজ টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর আইসড়া বাজারের সব গ্রাহক, ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বাজার কমিটির নেতা ও তার বাবাকে নিয়ে সালিশ বৈঠক করা হয়। সবুজের বাবা তার সম্পত্তি বিক্রি করে গ্রাহকের টাকা পরিশোধ করতে রাজি হন।
এ বিষয়ে বাসাইল উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কামরান খান বিপুল বলেন, ‘সবুজ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি। সে একটি ব্যাংকের এজেন্ট ছিল। বহু গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে শুনেছি।
‘এ ঘটনায় তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রমাণ পেলে তাকে দল থেকেও বহিষ্কার ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
টাঙ্গাইল ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং অফিসের ব্যবস্থাপক আব্দুর রউফ জানান, এই বিষয়ে তারা ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। গ্রাহকদের টাকা পরিশোধের চেষ্টা চলছে।