ফেনীর সোনাগাজীতে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যের বিরুদ্ধে হতদরিদ্র প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা বলছেন, প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নে শ্রমিক নিয়োগের কথা থাকলেও তা মানা হয়নি। তবে অভিযুক্ত জনপ্রতিনিধি বলছেন, বর্ষা মৌসুমে খননকাজ লেবার দিয়ে করা সম্ভব নয়।
হতদরিদ্র প্রকল্পের আওতায় উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরসাহাভিকারী গ্রাম ও চরচান্দিয়া ইউনিয়নের উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের মোহনায় শকুনিয়া শাখা খালে খনন চলছে। এই কাজের জন্য বরাদ্দ এসেছে তিন লাখ টাকা।
হতদরিদ্র প্রকল্পের নীতিমালায় বলা আছে, কাজ করাতে হবে শ্রমিকদের দিয়েই। তবে এলাকাবাসী বলছেন, চরদরবেশ ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য দেলোয়ার হোসেন শ্রমিকদের বাদ দিয়ে যন্ত্র ভাড়া করেছেন। সেই যন্ত্র দিয়ে খননকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বিচারের খননের সময় কেটে ফেলা হচ্ছে মূল্যবান গাছও।
সিরাজুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, কয়েক দিনে মেশিনে খালের দুই পাড়ের কয়েক হাজার গাছ কাটা পড়েছে। পিকআপপ্রতি ৩০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে খনন করা মাটি। দেলোয়ারের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলে জানান সিরাজুল ইসলাম।
অভিযোগে তিনি বলেন, খালের পাড়ে তার কিছু গাছ আছে। সেগুলো না কাটতে অনুরোধ করলে দেলোয়ার ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এই চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তার ২ হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।
একই ধরনের অভিযোগ উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের নূর আলম সুমন, দক্ষিণ চরসাহাভিকারী গ্রামের রবিন্দ্র কুমার দাস, আবু তাহের, রতন চন্দ্র দাস, পরিমল চন্দ্র দাস, হরলাল চন্দ্র দাস, চরচান্দিয়া ইউনিয়নের মহেশ্চর গ্রামের সুধীর চন্দ্র দাস, মতি লাল দাস ও তুষার চন্দ্র দাসসহ অনেকের।
এ বিষয়ে ইউএনও জহিরুল হায়াৎ বলেন, ‘গ্রামবাসীর একটি লিখিত অভিযোগ আমি পেয়েছি। হতদরিদ্রদের দিয়ে কাজ করানোর কথা রয়েছে প্রকল্পের বিধিতে। অথচ তিনি তা অনুসরণ করেননি। বিষয়টি তদন্ত করতে প্রকল্প পরিচালককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি প্রতিবেদন দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তবে সব অভিযোগ নাকচ করেছেন ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে লেবার দিয়ে খাল সংস্কার কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই জলাবদ্ধতা নিরসনে যন্ত্র দিয়ে খাল খনন করেছি।’
চরদরবেশ ইউপির চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম ভূট্টো জানান, ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখবেন।