বাবার দায়ের কোপে বরগুনার তালতলীতে খুন হয়েছে মোহাম্মদ সুমন নামের এক কিশোর। মাকে রক্ষা করতে গিয়েই সে প্রাণ হারায় বলে স্বজনরা জানান। সুমনের বাবা আসাদুল খাঁন পলাতক।
তালতলী উপজেলার টিঅ্যান্ডটি এলাকায় বুধবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সুমন তালতলী সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।
প্রতিবেশী মোহাম্মদ নাইম জানান, স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে আসাদুল খাঁন তালতলী শহরের টিঅ্যান্ডটি সড়কের একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। স্ত্রী সেলিনা বেগমের সঙ্গে বুধবার বেলা ১১টার দিকে ঝগড়া হয় আসাদুলের। তখনই প্রাইভেট পড়ে বাসায় ফেরে সুমন।
ঝগড়ার এক পর্যায়ে আসাদুল ধারালো অস্ত্র দিয়ে সেলিনাকে কোপাতে যান। তখন মাকে বাঁচাতে সামনে দাঁড়িয়ে যায় সুমন। দায়ের কোপ লাগে সুমনের কপাল ও মাথায়। গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, ঘটনার পরপর আসাদুল খাঁন নিজেই হাসপাতালে নেন ছেলেকে। চিকিৎসক যখন সুমনের শারীরিক অবস্থা খারাপ বলে জানান, তখনই ভড়কে যান আসাদুল। আত্মীয়দের হেফাজতে সুমনকে আমতলী হাসপাতালে রেখেই পালিয়ে যান আসাদুল।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক কে এম তানজিরুল ইসলাম বলেন, 'হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই সুমনের মৃত্যু হয়েছে।'
সুমনের মৃত্যুর পর মা সেলিনা বেগম বলেন, ‘ওর বাফে মোরে প্রায়ই হুদাহুদি মাইরধইর করত। আইজগো আবারো দা দিয়া কোপ দিতে চাইছিল, পোলাডায় সামনে খারইয়া মোরে বাচাইতে চাইছেলে। ব্যাডায় (স্বামী) হেরপরও থামে নাই, মোর পোলাডারে কোপ দিয়া মাইরা হালাইছে। ওরে ধইরা ফাঁসি দেন আপনেরা।’
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম হাওলাদার জানান, স্কুলছাত্র সুমনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘ আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনার জন্য অভিযুক্ত আসাদুলকে আটকের চেষ্টা চলছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।’