যশোরে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১০ জন। জেনারেল হাসপাতাল ভরে গেছে করোনা রোগীতে। বেড সংকুলান না হওয়ায় রোগীর ঠাঁই হয়েছে মেঝেতে। সংক্রমণ দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় সাত দিনের কঠোর লকডাউন দিয়েছে প্রশাসন।
বুধবার রাত ১২টা থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত যশোর জেলায় কঠোর লকডাউনের বিধিনিষেধ জারি থাকবে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেলা প্রশাসক (ডিসি) তমিজুল ইসলাম খানের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
যশোরে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে মঙ্গলবার মারা গেছেন ১০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২৫৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনা ডেডিকেটেড ইউনিটের ৮০ শয্যা রোগীতে ভরে গেছে। অন্তত ৩০ জনকে হাসপাতালের মেঝেতে রাখা হয়েছে। এখন হাসপাতালের মেঝেতেও জায়গা নেই।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা আরিফ আহমেদ বলেন, ‘যশোরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। কঠোর লকডাউন ছাড়া এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। হাসপাতালে করোনা রোগীদের জায়গা দেয়া যাচ্ছে না। চাপ কমানোর জন্য মঙ্গলবার থেকে বেসরকারি জনতা হাসপাতালে ভারতফেরত রোগীদের রাখা হচ্ছে।’
জেলার সব গরুর হাট বন্ধ রাখাসহ ডিসির সই করা কঠোর লকডাউন প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তজেলা বাস, ট্রেনসহ সব গণপরিবহন, সিএনজি, রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, থ্রি হুইলার, হিউম্যান হলার চলাচল বন্ধ থাকবে।
তবে অ্যাম্বুলেন্স, জরুরি পণ্য বহনকারী ট্রাক এবং জরুরি সেবাদানের ক্ষেত্রে এ আদেশ প্রযোজ্য হবে না।
কাঁচাবাজার, ফুল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান দুপুর ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এ ছাড়া সব ধরনের দোকান, শপিংমল, হোটেল, রেস্তোরাঁ, চায়ের দোকান, বিপণিবিতান বন্ধ থাকবে। ওষুধের দোকান সার্বক্ষণিক খোলা রাখা যাবে।
আইনশৃঙ্খলা ও কৃষি উপকরণসহ জরুরি পরিষেবার যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।
সবাইকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। জরুরি প্রয়োজনে চলাচলকারী সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে।শিল্প-কলকারখানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে।
পর্যটনস্থল, পার্ক, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। জনসমাবেশ হয় এমন সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় জমায়েত বন্ধ থাকবে।
স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ওয়াক্তের নামাজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেমসহ সর্বোচ্চ ৫ জন ও জুমার নামাজ সর্বোচ্চ ২০ জন জামাতে আদায় করা যাবে। অন্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও এর বেশি জমায়েত হওয়া যাবে না।