বাগেরহাটে মোংলায় মো. হৃদয় নামে এক কিশোর হত্যার দায়ে দুই কিশোরকে সাত বছরের জন্য শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বাগেরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মো. নূরে আলম মঙ্গলবার বিকেলে আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো, বাগেরহাটের মোংলা পৌরসভার মালগাজী এলাকার মো. বাবুল হাওলাদারের ছেলে মো. জিহাদুল ইসলাম জিহাদ এবং একই এলাকার আমির হোসেনের ছেলে শাহীন হোসেন। তাদের দুজনের বয়স ১৭ বছর।
আর নিহত মো. হৃদয় মোংলা পৌরসভার আব্দুল হাই সড়কের মো. দুলাল তালুকদারের ছেলে। তার বয়স ১৬ বছর।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রণজিৎ কুমার মন্ডল বলেন, নিহত হৃদয় জিহাদুল ও শাহীনের বন্ধু। এরা তিনজনই মাদকাসক্ত ছিল। ঘটনার দিন ২০১৭ সালের ২৯ মে রাত ৮টার দিকে মাদক সেবন নিয়ে হৃদয়ের সঙ্গে শাহীন ও জিহাদের বিবাদ হয়। এর জেরে শাহীন ও জিহাদ মিলে হৃদয়কে মাথায় আঘাত ও পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে মরদেহটি বেড়িবাঁধ এলাকায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
পরদিন হৃদয়ের মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করে। ৩০ মে নিহত হৃদয়ের বাবা মো. দুলাল তালুকদার অজ্ঞাতদের আসামি করে মোংলা থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটির তদন্তভার পায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. খলিলুর রহমান ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই নিহতের দুই বন্ধু জিহাদ ও শাহীনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা হত্যার কথা স্বীকার করে। তদন্ত শেষে ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিচারক ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
দীর্ঘ শুনানি শেষে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারার অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় শিশু আইন অনুযায়ী তারা দোষী সাব্যস্ত হয়। আসামিরা অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় শিশু আইন ২০১৩-এর ৩৪ ধারা মতে তাদের সাত বছর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে রাখার আদেশ দেন বিচারক।
আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী বিধান চন্দ্র মণ্ডল।
রায় ঘোষণার পর আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, আমার মক্কেল ন্যায়বিচার পায়নি। রায়ের কপি হাতে পেলে উচ্চ আদালতে আপিল করব।