নেত্রকোণার খালিয়াজুরীতে ভুল চিকিৎসায় এক দিনমজুরের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার পাঁচহাট গ্রামে রোববার রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা হয়।
মৃত মহসিন মিয়া ওই গ্রামেরই বাসিন্দা।
অভিযুক্ত পল্লি চিকিৎসক হচ্ছেন একই গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন। তিনি গ্রামের বাজারে তারেক মেডিক্যাল হল নামে একটি ওষুধের দোকান চালান।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার পরপরই ওই দিনমজুরকে চিকিৎসা দেয়া পল্লি চিকিৎসক গা-ঢাকা দিয়েছেন।
মহসিন মিয়ার স্ত্রী আমেনা আক্তার অভিযোগ করে জানান, তার স্বামী মহসিন কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। এ কারণে রোববার সন্ধ্যায় চিকিৎসার জন্য পল্লি চিকিৎসক তোফাজ্জলের কাছে গেলে তিনি তাৎক্ষণিক কিছু ভিটামিন ওষুধ দেন। পরে রাত ৮টার দিকে বাড়িতে গিয়ে একটি স্যালাইন ও দুটি ইনজেকশন দেন মহসিনকে।
রাতে ঘণ্টা খানেকের মধ্যে স্যালাইন শেষ হওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। ছটফট করতে থাকেন। একপর্যায়ে যৌনাঙ্গ ও পায়ুপথ দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। রাত ১২টার দিকে তিনি মারা যান।
আমেনা আক্তার বলেন, ‘ভুল চিকিৎসা কইরাই আমার স্বামীরে ডাক্তারে মাইর্যা ফালাইছে। আমার স্বামী তরতাজা আছিল। আমি এই ডাক্তারের বিচার চাই।’
মহসিনের প্রতিবেশী রাজন মিয়া বলেন, ‘একেবারেই তাজা মানুষটা আছিল মহসিন মিয়া। উল্টাপাল্টা ওষুধ দিয়া লোকটারে মাইর্যা ফালাইছে। ঘটনার পর থেকে পল্লি চিকিৎসকের দোকান বন্ধ আছে। হে এলাকা ছাইড়া পলাইছে।’
ঘটনার পর থেকে পরিবারের একটি নম্বরে ফোন দিয়ে চিকিৎসক তোফাজ্জলকে পাওয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার চিকিৎসা ঠিকই আছে। কোনো ভুল চিকিৎসা হয়নি। রাতে তাকে ডেক্সটোজ ১০০০ এমএল স্যালাইন দেই। মিনিটে ৬০ ফোটা করে। তাছাড়া বি-প্লেক্স-১০ এমএল ও ক্যালসিয়াম-৫ এমএল ইনজেকশন দেই। পরে কেন সে মারা গেছে তা আমি জানি না।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আতাউর গনি ওসমানী বলেন, ‘মহসিন মিয়াকে যে ইনজেকন ও স্যালাইন পুশ করার কথা বলা হচ্ছে তাতে তার মৃত্যু হওয়ার কথা নয়। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বা দ্রুত স্যালাইন পুশ করার কারণে তার মৃত্যু হতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখলে সঠিক কী কারণে মারা গেছেন তা বলা যাবে।’
খালিয়াজুরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মহসিন মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে মামলা নেয়া হবে।