বাবা মার অনেক স্বপ্ন নিয়ে পৃথিবীতে আসে রঞ্জিতা রানী বৈদ্য। কিন্তু বয়স যখন পাঁচ, তখন টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে হারান চোখের দৃষ্টি। চার বোন এক ভাইয়ের মধ্যে রঞ্জিতা চতুর্থ। চোখের দৃষ্টি হারানো মধ্যেই হারান বাবাকে। এবার নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে মায়ের হাত ধরে আসলেন ভোট কেন্দ্রে।
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সিংচাপইড় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সোমবার সকালে মহদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে এসে ভোট দেন তিনি। ভোট শেষে নিউজবাংলার প্রতিবেদকের সঙ্গে কথাও বলেন রঞ্জিতা।
তিনি বলেন, ‘ছোট বেলা থকি আমি চোখে দেখি না, আমার বাবা নাই, মা আমারে লইয়া আইছোইন ইকানো (আসেন এখানে), আমি দেখতে পারি না করিয়া কিতা ভোট দিতাম না? আমি ভোট দিসি, আর সবাইরে কইমু ভোট দেওয়া নিজের অধিকার, আমি টিভিত হুনছি (শুনেছি) বেটায় কইছে আমার ভোট আমি দিমু যারে খুশি তারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভাই আমরার কুব কষ্টের জীবন। বাবা নাই, এক ভাই আছে, হে যেতা আনে আমরা খাই। আমরা নিজেরার একটু জায়গাও নাই। আমি ভাতা পাই কিন্তু এই টাকায় কি সংসার চলে?’
এদিকে মমতা রানী বৈদ্য অনেক কষ্টে বড় তিন মেয়ের বিয়ে দিলেও এই রঞ্জিতাকে নিয়েই বেশি চিন্তা তার।
তিনি বলেন, ‘বাকি মেয়েরারে কোনো লাখান বিয়া দিসি এখন এই ফুরিটার কিচ্ছু করিয়া যাইতে পারলে শান্তিতে মরতে পারতাম। আমি গেলেগি তাই ক্যামনে খাইব, ক্যামনে চলব।’
‘সকাল থকি জিদ ধরছে ভোট দিতো ওয় লইয়া আইলাম তাইরে। আপনারা যদি পারোইন আমার কানা ফুরিটার লাগি কিচ্ছু কইরোইন (সকাল থেকে জেদ ধরেছে, তাই তারে ভোট দিতে নিয়ে আসছি। আপনারা যদি পারেন তবে আমার অন্ধ মেয়েটার জন্য কিছু করবেন)।’