অটোরিকশা হারিয়ে চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছিলেন ভোলার মিজানুর রহমান। এমনিতেই এক হাত নেই, শারীরিক প্রতিবন্ধিত্বের চেয়ে এখন বড় হয়ে উঠেছিল উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন অটোরিকশা হারানোর বেদনা।
ভোলার তোফায়েল আহমেদ ফাউন্ডেশন তাকে একটি অটোরিকশা উপহার দিয়েছে। তাতেই আবার ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন প্রতিবন্ধী মিজানুর রহমান।
মিজান বলেন, ‘অটোরিকশাটি হারিয়ে অনেক কষ্টে ছিলাম, আমার পরিবার অনেক কষ্টে ছিল। নতুন রিকশাটি পেয়ে আমার পরিবারের মুখে হাসি ফুটছে। এখন আমি অটো চালিয়ে আবার ধারদেনা শোধ করতে পারব।'
তোফায়েল আহমেদ ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মইনুল হোসেন বিপ্লব রোববার দুপুরে ভোলা সদর উপজেলা পরিষদের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে অটোরিকশা হস্তান্তর করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভোলার জেলা প্রশাসক তৈফিক-ই-লাহী চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘প্রতিবন্ধী মিজানের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমি আনন্দিত। সামর্থ্য অনুযায়ী আরও মানুষকে সহযোগিতা করব।’
ভোলায় তোফায়েল আহমেদ ফাউন্ডেশন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদের নামে গড়া একটি প্রতিষ্ঠান। ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করা হয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাসাননগর ইউনিয়নের মির্জাকালু গ্রামের দিনমজুর আল-আমিনের ছেলে ৩০ বছর বয়সী মিজানুর রহমান। ছোটবেলায় বাবা মারা যাওয়ার পরে সংসারের দায়িত্ব নিতে হয় মিজানুরকে।
২০০৭ সালে ধান মাড়াইয়ের সময় মেশিনে মিজানুরের ডান হাত কেটে যায়। ২০১৩ সালে বাঁ হাত দিয়ে লিখে এসএসসি পাস করেন তিনি। অভাবে পড়াশোনা আর এগোয়নি। এক হাত দিয়ে রিকশা চালিয়ে তিনি এখন সংসারের হাল ধরে রেখেছেন।
মিজানুর জানান, ধারদেনা করে দেড় বছর আগে অটোরিকশা (বোরাক) কিনেছিলেন। মা-বাবা, স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সংসার তার। বোরাকের উপার্জনে ভালোই চলছিল। কিন্তু গত ৬ মে ভোলার সদর হাসপাতাল রোড এলাকা থেকে এটি চুরি হয়ে যায়। তাতে হতাশায় পড়ে যান মিজানুর।
তোফায়েল আহমেদ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে মিজানুরকে অটোরিকশা দেয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম গোলদার, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল ইসলামসহ অনেকে।