বরগুনার বেতাগী উপজেলার সরিষামুড়ি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. ইউসুফ শরীফের বাড়িতে ঢুকে তার স্ত্রীসহ ৯ জনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ সময় বসতঘরে ভাঙচুর চালিয়ে অগ্নিসংযোগও করা হয়। রোববার রাত আটটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ইউসুফ শরীফের পরিবারের অভিযোগ, একই ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী ইমাম হাসান শিপনের লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ছাড়া একই উপজেলার বেতাগী সদর ও বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়নে পৃথক ঘটনায় তিনজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে।
সোমবার সকালে ওই ইউনিয়নসহ বরগুনার ২৯টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ইউসুফ শরীফের ছেলে হামিম শরীফ বলেন, ‘রাত আটটার দিকে ইমাম হাসান শিপনের শতাধিক সমর্থক মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে এসে অতর্কিতভাবে আমাদের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। এ সময় তারা আমার মাসহ নয়জনকে কুপিয়ে জখম করে। পরে আমাদের ঘর ও গোয়াল ঘরে আগুন লাগিয়ে চলে যায়। পরে এলাকাবাসী ও বেতাগী ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।’
আহতদের মধ্যে ইউসুফ শরীফের স্ত্রী তাসলিমা আক্তারের নাম জানা গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নারী রয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
আগুন লাগার বিষয়টি নিশ্চিত করে বেতাগীর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা মিজান সালেহ বলেন, ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আধা ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
সরিষামুড়ি ইউনিয়নের নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী ইমাম হাসান শিপন তার কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমার কোনো কর্মী-সমর্থক এ ঘটনায় জড়িত নয়। নির্বাচনের আগ মুহূর্তে আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ সুপরিকল্পিত। আমি চাই পুলিশ সঠিক রহস্য উদঘাটন করুক।’
এদিকে রোববার রাত সাড়ে নটার দিকে নলটোনা ইউনিয়নের গর্জনবুনিয়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় বাতেন নামের একজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। আহত বাতেনকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নৌাকর প্রার্থী আলমগীর বিশ্বাসের দাবি, স্বতন্ত্র প্রার্থী হুমায়ুন কবিরের সমর্থকরা মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে বাতেনকে কুপিয়ে ব্রিজের নিচে ফেলে রেখে যায়। পরে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্বতন্ত্র প্রাথী হুমায়ুন কবির।
এ ছাড়া বেলা ১টার দিকে বেতাগী সদর ইউনিয়নের ঝোপখালি ব্রিজের পাশে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহপ্রচার সম্পাদক মাহমুদ সিকদার মনির ও জাহাঙ্গীর নামের দুজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়।
নৌকার প্রার্থী হুমায়ুন কবির খলিফার অভিযোগ, স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুলের কর্মীরা ওই দুজনকে কুপিয়ে জখম করে ফেলে রেখে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ইউপি সদস্য প্রার্থীদের দ্বন্দ্বে এ ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও বেতাগী সার্কেল) মেহেদী হাসান বলেন, সরিষামুড়ির ঘটনায় খবর পেয়ে বেতাগী থানাপুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে । এ ছাড়া বেতাগী সদর বরগুনা সদরের নলটোনার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ।