নওগাঁয় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্তের নতুন রেকর্ড হয়েছে। এই সময় ২৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর আগে ১৬ জুন এক দিনে সর্বোচ্চ ১২৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৫৬২ জন।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি মহাদেবপুর উপজেলা সদরে। শনিবার বিকেলে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
নওগাঁ সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেল ৪টা থেকে রোববার বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ ও বগুড়ার টিএমএসএস হাসপাতালের আরটি-পিসিআর ল্যাবে ৫২১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৭৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া নওগাঁ সদর হাসপাতালসহ জেলার ১০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় ২০৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫৩ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। জেলায় শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
নতুন করে শনাক্তদের মধ্যে নওগাঁ সদর উপজেলার ৭৯ জন, রানীনগর উপজেলার ১০ জন, আত্রাইয়ের ৭ জন, মহাদেবপুরের ২১ জন, মান্দার ২২ জন, বদলগাছির ১৯ জন, পত্নীতলার ১৭ জন, ধামইরহাটের ১০ জন, নিয়ামতপুরের ২০ জন, সাপাহারে ১৫ জন ও পোরশা উপজেলার ১০ জন ।
এর আগে সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছিল গত বুধবার। সেদিন আক্রান্তের হার ছিল ২১ দশমিক ৮২ শতাংশ। পরদিন শনাক্তের হার কিছুটা কমে ১৯ শতাংশ হয়। শুক্রবার আবার তা বেড়ে ৩৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। চলমান বিধিনিষেধের মধ্যেও জেলায় চলতি মাসে রেকর্ডসংখ্যক রোগী শনাক্ত হয়েছে।
করোনার সংক্রমণ রোধে চলতি মাসের ৩ জুন থেকে ৯ জুন পর্যন্ত নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় সপ্তাহব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এই লকডাউন শেষে পরে পুরো জেলায় বিশেষ বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে নওগাঁয় ওই বিশেষ বিধিনিষেধ আগামী ২৩ জুন পর্যন্ত থাকবে।
নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা. এ বি এম আবু হানিফ বলেন, ‘নওগাঁ জেলায় যে হারে মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে তাতে আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগ চিন্তিত হয়ে পড়েছে। লকডাউন শেষে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যেও জেলায় করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া খুবই উদ্বেগের বিষয়। আসলে মানুষের অসচেতনতার কারণেই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, সবাই যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে করোনার সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো।
সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে সময় থাকতে সচেতন হতে হবে। নইলে সামনে করোনা সংক্রমণ আরও বেড়ে যেতে পারে।
নওগাঁ সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার আশীষ কুমার সরকার ( কন্ট্রোল ডিজিজ ) জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সুস্থ্ হয়েছেন ২৪ জন এবং এ পর্যন্ত মোট সুস্থ্ হয়েছেন ২ হাজার ৩২৭ জন। সুস্থ্ হওয়ার পর বর্তমানে ১ হাজার ২৩৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। এদের মধ্যে নওগাঁ জেলা সদরের হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৪৬ জন। অন্যরা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিজ নিজ বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ সময় জেলায় মোট কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ২৫৩ ব্যক্তিকে। কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৫৪ জন। বর্তমানে জেলায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৬৮ জন এবং হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন মোট ২ হাজার ৮৪২ জন।