মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের দ্বিতীয় পর্যায়ে নেত্রকোণায় ঘর প্রদানে প্রশাসনের দৃষ্টি ট্রান্সজেন্ডার ও প্রতিবন্ধীদের দিকে।
প্রকল্পটির অধীনে এবার জেলায় ১০ উপজেলায় ৯২৫ ছিন্নমূল পরিবার জমিসহ সেমিপাকা ঘর পাচ্ছে।
রোববার ওই পরিবারের হাতে স্বামী ও স্ত্রীর যৌথনামে ভূমির মালিকানা দলিল, নামজারী খতিয়ান ও হস্তান্তর করবে জেলা প্রশাসন।
এর আগে প্রথম পর্যায়ে দেয়া হয়েছে ৯৬০ পরিবারকে।
দ্বিতীয় পর্যায়ের ১৭ কোটি ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৯২৫ ঘরের মধ্যে ৮৯ টি ঘর দেয়া হচ্ছে ট্রান্সজেন্ডার ও প্রতিবন্ধীদের মাঝে।
শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে আসেন জেলা প্রশাসক কাজী মো. আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এবার ঘর বিতরণে উপজেলা প্রশাসনকে ট্রান্সজেন্ডার ও প্রতিবন্ধীদের দিকে বিশেষ যত্নশীল হতে বলা হয়েছিল। এর ফলে ৯৬০টি ঘর প্রদানের মধ্যে ৬৫ ঘর প্রতিবন্ধী ও ২৪ ঘর দেয়া হচ্ছে ট্রান্সজেন্ডারদের।’
প্রথম ধাপে প্রতিটি ঘর নির্মাণে এক লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ হলেও দ্বিতীয় ধাপে ব্যয় হচ্ছে এক লাখ ৯০ হাজার টাকা।
এই প্রকল্পের আওতায় ঘর প্রতি দুটি কক্ষ, একটি রান্না ঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা রয়েছে।
জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রকল্পের মাধ্যমে পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রয়েছে বিদ্যুতের ব্যবস্থাও।
রোববার কতগুলো পরিবার উঠতে পারবে-জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘৬০০ ঘর পুরোপুরি শেষ করা হয়েছে। এসব ঘরে কাল থেকেই তারা বসবাস করা যাবে। বাকিগুলোর কাজ প্রায় শেষের দিকে। দ্রুততম সময়ে কাজ শেষ করে হস্তান্তর করা হবে।’
জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নির্মানাধীণ ঘর পরিদর্শন করার কথা জানিয়ে জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান বলেন, যাদের ঘর দেয়া হচ্ছে তারা সকলেই হতদরিদ্র ছিন্নমূল মানুষ ।তারা কেউ রিকশা চালান, কেউবা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। আবার কেউ ক্ষুদ্র ব্যবসা এবং মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। এসকল মানুষদের জীবনমান উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার প্রকল্পে সংযুক্তি করা হবে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ঋণ সহায়তা দেয়া হবে। প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। তাদেরকে প্রশাসন দেখভাল করবে।
তিনি বলেন, ঘর বরাদ্দ পাওয়া মানুষদের অভিব্যাক্তি ছিল আনন্দের।সরকারের এই প্রকল্পে জমিসহ একেকটি ঘর যেন একেকজন গৃহহীন মানুষের বাস্তবে পরিণত হওয়া স্বপ্ন। গৃহহীনরা পাকা দালান পাবে, এটি তারা কখনো কল্পনাও করেনি। এমতাবস্থায় ঘর পাওয়ার আনন্দে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তারা।
দ্বিতীয় ধাপের ঘরের মধ্যে দুর্গাপুরে ৪৫টি, সদরে ৬৪টি, বারহাট্টায় ২৫টি, কলমাকান্দায় ৫৫টি, আটপাড়ায় ৫০টি, কেন্দুয়ায় ৫৬টি, মোহনগঞ্জে ১০৫টি, মদনে ১০৫টি, খালিয়াজুরীতে ৪০০টি ও পূর্বধলায় ২০টি রয়েছে।
এর মধ্যে সদরে ৮টি ট্রান্সজেন্ডার ৪টি প্রতিবন্ধী, কেন্দুয়ায় ৭টি ট্রান্সজেন্ডার,দুর্গাপুরে ৩টি তৃতীয় লিঙ্গ ১টি প্রতিবন্ধী,পূর্বধলায় ৫টি প্রতিবন্ধী,কলমাকান্দায় ১৫টি প্রতিবন্ধী,মোহনগঞ্জে ৪টি প্রতিবন্ধী, আটপাড়ায় ১০টি প্রতিবন্ধী, মদনে ৬টি তৃতীয় লিঙ্গ ১০টি প্রতিবন্ধী, বারহাট্রায় ৬টি প্রতিবন্ধী ও খালিয়াজুরীতে ১০টি প্রতিবন্ধীদের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।