রাজশাহী নগরীর হেতেমখাঁ লিচুবাগান এলাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর সৃষ্ট উত্তেজনার কারণে পুলিশ পাহারায় জুমার নামাজ হয়েছে।
পূর্ববিরোধের জেরে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষের সময় রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হিন্দু সম্প্রদায়ের রকি কুমার ঘোষকে দায়ী করে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকাবাসীকে জড়ো করার চেষ্টা করা হয়। মসজিদে হামলা হয়েছে বলেও এ সময় ছড়ানো হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ছোট্ট একটি সংঘর্ষের ঘটনাকে ধর্মীয় ইস্যু বানানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে এখন পরিবেশ শান্ত আছে।
স্থানীয়রা জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর হেতেমখাঁ লিচুবাগান এলাকা এবং সিপাইপাড়া এলাকার কিছু কিশোর ও যুবকের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সেখানে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রকি গেলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। পরে ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন শাওন ও রকির সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
পুলিশ জানায়, ওই সময় এলাকায় ছড়ানো হয়, রকি তার দলবল নিয়ে মসজিদে হামলা করেছেন। পরে লিচুবাগান মসজিদ থেকে লোকজনকে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানালে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তবে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পরে ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সংঘর্ষের আশঙ্কায় শুক্রবার পুলিশ পাহারাতেই জুমার নামাজ হয়।
এদিকে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুপুরে ওই এলাকায় যান মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা। তারা দুই পক্ষের সঙ্গেই কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নির্দেশনা দেন।
এ নিয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রকি বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক কোনো ঝামেলা না। এখানে দুই পাড়ার ছোটদের ঝামেলা, আমি এলাকার ভাই হিসেবে তাদের থামানোর উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাকেই দোষারোপ করছে।
‘আমি আমার ধর্ম ও মন্দিরকে যেমন ভালোবাসি, ঠিক তেমনি মুসলমান ও মসজিদকে শ্রদ্ধা করি। অথচ এখানে চক্রান্ত করে আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ও সম্মান নষ্ট করার জন্য একটি মহল চেষ্টা করছে।’
রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘মসজিদে হামলা বা ধর্মীয় কোনো বিষয় এ ঘটনার সঙ্গে নেই। পুলিশ তদন্ত করে সাম্প্রদায়িক তেমন কিছু পায়নি। আর এ নিয়ে এখন পর্যন্ত পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগও আসেনি।’