রাজশাহী শহরে চলমান ‘কঠোর লকডাউন’ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে।
গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এক সপ্তাহের লকডাউন শেষ হবার কথা ছিল বৃহস্পতিবার রাতে। তবে করোনা পরিস্থিতির তেমন উন্নতি না হওয়ায় মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বুধবার রাতে রাজশাহী সার্কিট হাউজে জেলা প্রশাসনের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
রাজশাহী শহরে গত শুক্রবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া লকডাউনে জরুরি সেবা ছাড়া সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। চলছে না যানবাহন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষের বাড়ি থেকে বের হওয়ার উপরও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
তবে এর পরও করোনা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি। করোনায় মৃত্যু সংখ্যা আগের মতোই রয়েছে। সংক্রমণও উল্লেখযোগ্য হারে কমেনি।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১ জুন থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত এই হাসপাতালের করোনা ইউনিটেই মৃত্যু হয়েছে ১৬১ জনের। এর মধ্যে ৯৩ জন মারা গেছেন করোনা শনাক্ত হওয়ার পর। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে।
এমন পরিস্থিতিকে ভালোভাবে দেখছিলেন না বিশেষজ্ঞরা। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী বলেন, ‘গত কয়েকদিনে পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়েছে বলে রিপোর্ট দেখে মনে হয় না। সংক্রমণও কমেনি; মৃত্যুও কমেনি। লকডাউন আরও বাড়ানো জরুরি।’
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, ‘লকডাউনের ফল পেতে অন্তত দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করতেই হবে। আর পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। এখন লকডাউনের বিকল্প নাই।’
সব মিলিয়ে লকডাউন আরও বাড়ানোর সুপারিশ করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। এর পর বুধবার সন্ধ্যায় সভায় বসেন জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সেখানে আলোচনা শেষে বিশেষ বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও সাত দিন বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল, রাজশাহী মহানগরের পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক, রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হাবিবুল আহসান তালুকদার ও সিভিল সার্জন কাইয়ুম তালুকদার।