ঢাকার সাভারে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে দেয়াল ধসে এক পোশাকশ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, টাকার বিনিময়ে বিষয়টির মীমাংসা হয়েছে। তবে এ কথা অস্বীকার করেছে মৃতের স্বজন।
স্থানীয় লোকজন জানান, পারভিন আক্তার প্রিয়া আশুলিয়ার শিমুলতলা এলাকায় প্রাইম ক্যাপ (বিডি) নামের একটি কারখানায় কাজ করতেন। তার বাড়ি কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী থানার আন্দারিঝাঁড় গ্রামে।
বুধবার ভোরে কারখানায় যাওয়ার সময় মেসার্স মেহেদী এন্টারপ্রাইজ নামে ইট-বালু সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের একটি দেয়াল তার ওপর ধসে পড়ে। এতে তিনি গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাকে নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে নিয়ে যায়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে প্রিয়াকে হাসপাতালে আনা হয়। এর ২-৩ মিনিটের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। তখনই পুলিশকে বিষয়টি জানালেও তারা ব্যস্ত আছে জানিয়ে বেলা ২টার দিকে হাসপাতালে আসে।
স্বজনদের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে দেয়াল নির্মাণ করায় এটি ধসে পড়েছে। মালিক সিমেন্ট ব্যবহার করেননি বললেই চলে। তারা এই দুর্ঘটনার বিচার চান।
বিকেল ৩টার দিকেও হাসপাতালের সামনে অ্যাম্বুলেন্সে প্রিয়ার মরদেহ নিয়ে তার ভাই আব্দুর রাজ্জাককে বসে থাকতে দেখা যায়।
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তানিম হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওইটা বাদী-বিবাদী মিটমাট হয়ে গেছে। ওরা ময়নাতদন্তও করবে না। ওরা খুব রিকোয়েস্ট করছে। তার (নিহতের) বাবা আসে নাই। বড় ভাই আর দুলাভাই আসছে।
“তবে তার বাবার সঙ্গে ফোনে কথা হইছে। উনি খুব কান্নাকাটি করতেছেন। আর বলতেছেন, ‘আপনার কাছে আমার অনুরোধ, আমার মেয়েটাকে অক্ষত অবস্থায় আমার কাছে দিয়ে দেন। এমনিতেও দেয়াল ধসে মেয়েটা অনেক কষ্ট পাইছে।’ আমি ওসি স্যারকে জানাইছি। পরে বিকেলে মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার স্বজনরা নিয়ে গেছে।”
এ বিষয়ে মেসার্স মেহেদী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মেহেদী হাসানের মোবাইলে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
তবে ওই জায়গার মালিক মোক্তার হোসেন বলেন, ‘আমি মেহেদী হাসানের কাছে জমি ভাড়া দিছি। ওখানে তিনি বাউন্ডারি বানিয়ে ইট-বালুর ব্যবসা করেন। তিন-চার মাসে আগে ওই বাউন্ডারি করা হইছিল।
‘গেল রাতে এক গাড়ি বালি নামাইছিল। বালিটা ওয়ালের সাথে চাপ দিয়া নামাইছে, রাতে আবার বৃষ্টি হইছিল। এই কারণে মনে হয় বালুর চাপে ওয়ালটা ধইসা পড়ছে।’
মীমাংসার বিষয়ে বলেন, ‘আমার সাথে কোনো কথা হয় নাই। আমি তো জানি না। ওরা হয়তো কিছু সামথিং ক্ষতিপূরণ দিবে।’
তবে প্রিয়ার দুলাভাই নুর জামান বলেন, ‘এটা অ্যাক্সিডেন্টই হইছে। দারোগার সাথে কথা হইছে। অভিযোগ করছি। এটা ভুল কথা, টাকা নেই নাই। শুধু অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া ১৫ হাজার ওনারা দিছে। যাদের ওয়াল ভাইঙ্গা পড়ছে ওনারাই দিছে।’