করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় নওগাঁ জেলাজুড়ে ১৫ দফা বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে।
বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসক মো. হারুন অর রশীদ স্বাক্ষরিত একটি গণবিজ্ঞপ্তিতে এ বিধিনিষেধ বাড়ানোর কথা জানানো হয়।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জেলার করোনা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় এ সংক্রান্ত গঠিত কমিটির সভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধকল্পে ১৫ দফা বিধিনিষেধ আগামী ২৩ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হলো।
এর আগে ৯ জুন নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় সাতদিনের বিশেষ লকডাউন তুলে নিয়ে জেলাজুড়ে ১৫ দফা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
১৫ দফা বিধিনিষেধের মধ্যে রয়েছে, অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত বাড়ি থেকে কেউ বের হতে পারবে না। অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলাচল করতে পারবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও ভারত সীমান্তের সাপ্তাহিক হাটগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে বিধিনিষেধ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী এই দুই জেলার সঙ্গে সকল যাতায়াতের পথ বন্ধ ও যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
এ ছাড়া, সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান, শপিংমল ও মার্কেট খোলা রাখা যাবে। তবে চায়ের স্টল বন্ধ থাকবে। হোটেল- রেস্তোরাঁ শুধু পার্সেলের মাধ্যমে খাবার সরবরাহ করতে পারবে। তবে মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে ব্যত্যয় হলে তাৎক্ষণিক দোকান, মার্কেট ও শপিংমল বন্ধ করে দেয়া হবে। জেলার সকল পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউিনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকবে। সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান, বিবাহ অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়ি পুরোপুরি লকডাউন করতে হবে এবং বাড়ির সকল সদস্য লকডাউনে থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে জুম্মার নামাজসহ প্রতি ওয়াক্তে সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লি অংশগ্রহণ করতে পারবেন ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে সমসংখ্যক ব্যক্তি প্রার্থনা বা উপাসনা করতে পারবেন।
গণবিজ্ঞপ্তিতে ১৫ দফা বিধিনিষেধ সবাইকে মেনে চলার জন্য আহ্বান জানানো হয়। এই বিধিনিষেধ মানা না হলে বিধিমোতাবেক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সতর্ক করা হয়।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় নওগাঁয় করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও দু্ইজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত দুইজনের বাড়ি নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায়।
একই সময়ে ১২৫ জনের দেহে নতুন করে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। ২৪ ঘণ্টায় জেলায় শনাক্তের হার ২১.৮১ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় এই পর্যন্ত মোট ৩ হাজার ১৬১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জনের। আর সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ২৬২ জন।
বুধবার দুপুরে নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা. এ বি এম আবু হানিফ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় ২৬২ জনের মধ্যে ৬২ জনের ও আরটিপিসিআর পরীক্ষায় ৩১১ জনের মধ্যে ৬৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়।