বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চাষাড়া বোমা হামলা: বিচারের অপেক্ষায় ২০ বছর

  •    
  • ১৬ জুন, ২০২১ ০৮:৪১

নিহত নজরুল ইসলামের মেয়ে সংগীতশিল্পী নুসরাত ইসলাম বৃষ্টি বলেন, ‘গত ২০ বছর বিচার পাইনি আর পাব কি না, তা জানি না। আমার বাবাসহ যারা মারা গেছেন, তারা আওয়ামী লীগ করেছে। বর্তমান সরকার আওয়ামী লীগের কিন্তু মামলার বিচার শেষ হচ্ছে না।’

২০ বছর পেরিয়ে গেলেও নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বোমা হামলার ঘটনার বিচার হয়নি। নিহত ব্যক্তিদের পরিবার আশায় আছে, প্রিয়জনের হত্যাকারী সাজা পাবে একদিন। আহত ব্যক্তিরা পঙ্গুত্ব নিয়ে বেঁচে আছেন।

২০০১ সালের ১৬ জুন নগরের চাষাড়ায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বোমা হামলা হয়। নিহত হন ২০ জন, আহত হন তৎকালীন সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও মহিলা লীগের শতাধিক নেতা-কর্মী।

এই দিনটি সেখানে পালিত হয় নারায়ণগঞ্জ বোমা হামলা ট্র্যাজেডি দিবস হিসেবে।

সেদিনের বোমা হামলায় দুই পা হারান রতন দাস। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘যারা নিহত হয়েছে, তারা বোঝে পরিবার নিয়ে কত কষ্টে আছে আর আমরা ভুক্তভোগী। বোমা হামলায় পা হারিয়েছি, ২০ জন মানুষ মারা গেল, কিন্তু এখন পর্যন্ত বিচার পেলাম না।’

নিহত নজরুল ইসলামের মেয়ে সংগীতশিল্পী নুসরাত ইসলাম বৃষ্টি বলেন, ‘গত ২০ বছর বিচার পাইনি আর পাব কি না, তা জানি না। আমার বাবাসহ যারা মারা গেছেন, তারা আওয়ামী লীগ করেছে। বর্তমান সরকার আওয়ামী লীগের কিন্তু মামলার বিচার শেষ হচ্ছে না।’

বোমা হামলা মামলার বাদী নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা বলেন, ‘মামলাটি অনেক বছর ধরে ঝুলে আছে। এর মধ্যে বিএনপি সরকারের সময় মামলার তদন্তে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়। কিন্তু আমরা সেটি মেনে নিইনি। পরে আদালতে নারাজি দিই।’

তিনি বলেন, বিস্ফোরক মামলায় ২০০৩ সালে ২৭ জনকে ও হত্যা মামলায় ২০১৪ সালে ২২ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুটি মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। এরপর থেকে সাক্ষ্য গ্রহণ চলছিল। তবে করোনা মহামারির কারণে সাক্ষীরা আদালতে হাজির হতে পারছেন না।

বোমা হামলার পরদিনই বিএনপি নেতা-কর্মীদের আসামি করে হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে আলাদা দুটি মামলা করেন অ্যাডভোকেট খোকন সাহা। চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন।

ওই বোমা হামলায় নিহত ব্যক্তিদের একজন ফুটপাতের পিঠা বিক্রেতা হালিমা বেগম। তার ছেলে কালাম এ ঘটনার পর শামীম ওসমান, তার দুই ভাইসহ কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন। পরে উচ্চ আদালতে সেটি খারিজ হয়ে যায়।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০০৩ সালে বিস্ফোরক মামলায় ২৭ জনকে ও ২০১৪ সালে হত্যা মামলায় ২২ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মামলায় গ্রেপ্তার হন চারদলীয় জোট সরকারের উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, ঢাকা সিটি করপোরেশনের কমিশনার আরিফুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদল নেতা শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানসহ ১০ জন।

আসামিদের মধ্যে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর বোমা হামলার মামলায় মুফতি হান্নানের মত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। কারাগারে রয়েছেন শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল ও আবদুস সালাম পিন্টু। ভারতে গ্রেপ্তার রয়েছেন দুই ভাই আনিসুল মোরছালিন ও মাহাবুবুল মুত্তাকিম।

মামলায় জামিনে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু ও ওবায়দুল হক। বাকি আসামিরা পলাতক। দুটি মামলায় ১০২ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩২ জন জনের সাক্ষ্য নেয়া শেষ হয়েছে।

বোমা হামলায় আহত রতন দাস

বোমা হামলার ঘটনার করা দুটি মামলা এখন নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতে বিচারাধীন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুর রহিম বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে মামলার আসামি ও সাক্ষীদের আদালতে হাজির করতে না পারায় বিচারে দেরি হয়েছে। হত্যা মামলায় ৫৬ জন সাক্ষীর মধ্যে এমপি শামীম ওসমানসহ ১৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, ডাক্তার ও ম্যাজিস্ট্রেট এখনও সাক্ষ্য দেননি। এ ছাড়া বিস্ফোরণ মামলায় ৮২ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জন সাক্ষী দিয়েছেন।

অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুর রহিম আরও বলেন, ‘দুটি মামলায় যেসব সাক্ষী এখনও সাক্ষ্য দেননি তাদের দ্রুত আদালতে হাজির করে এ বছর মামলার বিচার শেষ হবে বলে আশা করছি।’

এ বিভাগের আরো খবর