নওগাঁয় করোনায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়েছে।
জেলায় করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে প্রশাসন বিশেষ বিধিনিষেধ জারি করেছে। তবুও এর মধ্যেই জেলায় বেড়ে চলেছে করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণের সংখ্যা।
সোমবার সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮১টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে ৭২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। নমুনার বিপরীতে শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। এই নিয়ে নওগাঁ জেলায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৩ হাজার ৩৬জনে।
নওগাঁ জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির ফোকাল পারসন ও ডেপুটি সিভিল সার্জন মঞ্জুর-এ মোর্শেদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমিত হয়ে মারা যাওয়া দুই ব্যক্তি রানীনগর ও নিয়ামতপুর উপজেলার বাসিন্দা। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৫৪ জনের মৃত্যু হলো।
‘মৃতদের মধ্যে একজন হলেন রানীনগর উপজেলার বরগাছা গ্রামের মৃত আয়াত আলীর স্ত্রী শহিদা বেগম। শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিলে গতকাল সোমবার সকালে তাঁকে রানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি মারা যান। সেখানে তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে করোনা শনাক্তের বিষয়টি জানা যায়।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া অপর ব্যক্তি হলেন নিয়ামতপুর উপজেলার শ্রীমন্তপুর গ্রামের আইয়ুব আলী। সোমবার রাত ১০টার দিকে শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিলে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। পরে তাঁর মরদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে করোনা শনাক্ত হয়।
এর আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় একজনের মৃত্যু হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় তিন ধরনের নমুনা পরীক্ষায় (অ্যান্টিজেন, আরটিপিসিআর ও জিন এক্সপার্ট টেস্ট) ২৮১ নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে ৭২ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
সোমবার রাতে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ আরটিপিসিআর ল্যাব থেকে ৮৫ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল আসে। এতে ৩৯ জনের করোনা পজিটিভ আসে।
নতুন শনাক্তদের মধ্যে সদর উপজেলার ২৩ জন, রানীনগর উপজেলার ২ জন, আত্রাই উপজেলার ৪ জন, মহাদেবপুর উপজেলার ৮ জন, মান্দা উপজেলার ১২ জন, বদলগাছি উপজেলায় ৩ জন, পত্নীতলা উপজেলায় ৪ জন, ধামইরহাট উপজেলায় ৩ জন, নিয়ামতপুর উপজেলায় ৪ জন, সাপাহার উপজেলায় ৩ জন এবং পোরশা উপজেলায় ৬ জন।
অন্যদিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত ৩ জুন থেকে ৯ জুন পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী জেলায় আংশিক লকডাউন ঘোষণা করে স্থানীয় প্রশাসন। পরে লকডাউন তুলে দিয়ে সংক্রমণ ঠেকাতে ১০ জুন থেকে সপ্তাহব্যাপী পুরো জেলায় বিশেষ বিধিনিষেধ আরোপ করে জেলা প্রশাসন। ১৬ জুন পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ চলবে।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে জেলায় কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ১৭৪ জনকে। এ পর্যন্ত সর্বমোট কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয় ২৪ হাজার ৩০১ ব্যক্তিকে। এই ২৪ ঘণ্টা কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ৭৪ জনকে। এ পর্যন্ত মোট ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ২২ হাজার ৪৪ ব্যক্তিকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ২ হাজার ২৫৭ জন।