জালিয়াতির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের হাতে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), জাতীয়তা ও জন্ম নিবন্ধন সনদ তুলে দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের চার কর্মকর্তা-কর্মচারী, দুই জনপ্রতিনিধিসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন মঙ্গলবার বিকেলে মামলাটি করেন।
আসামিরা হলেন চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানা নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন, জেলা নির্বাচন অফিসের সাবেক অফিস সহায়ক নুর আহম্মদ, হাটহাজারী উপজেলা নির্বাচন অফিসারের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর (অস্থায়ী) সাইফুদ্দিন চৌধুরী, ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসের টেকনিক্যাল এক্সপার্ট (অস্থায়ী) সত্য সুন্দর দে।
আসামির মধ্যে জনপ্রতিনিধিরা হলেন হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল ইসলাম।
মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক জন্মসনদ প্রস্তুতকারী বেলাল উদ্দিনকেও মামলার আসামি করা হয়েছে।
মামলায় আসামির তালিকায় আরও রয়েছেন ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা আবদুর ছালাম, আজিজুর রহমান এবং রোহিঙ্গা রমজান বিবি ও নজির আহম্মেদ।
এজাহারে বলা হয়, ২০১৯ সালে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত ডবলমুরিং থানার নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন অর্থের বিনিময়ে রোহিঙ্গা রমজান বিবিকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে সরাসরি জড়িত ছিলেন। ওই বছর ২১ ফেব্রুয়ারি তাকে ফরম সরবরাহ করেন চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক নুর আহম্মদ।
নির্বাচন কমিশনের ল্যাপটপ ব্যবহার করে জয়নাল নিজ বাসায় ডাটা এন্ট্রি করেন। এ কাজে তাকে সহায়তা করেন হাটহাজারী উপজেলার নির্বাচন অফিসের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর সাইফউদ্দিন চৌধুরী।
রোহিঙ্গা রমজান বিবি ও তার দুই মেয়ের পাসপোর্ট করার জন্য জাতীয়তা সনদপত্র ও জন্ম নিবন্ধন সনদ দেন হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নুরুল ইসলাম।
তাদের জন্মসনদ প্রস্তুতকারী হলেন মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন ও মির্জাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আবছার। এতে সহযোগিতা করেন মোহাম্মদ আজিজুর রহমান ও তার বাবা আবদুর ছালাম।
মামলার বাদী দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘আসামিরা একে অপরের যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার আশ্রয় নেন। তারা রোহিঙ্গাদের ভুয়া পরিচয়, নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে জন্ম নিবন্ধন সনদ এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের স্মার্ট কার্ড তাদের হাতে তুলে দিয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।’
তদন্তে আসামিদের অপরাধের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ মিলেছে বলে জানান দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন।