বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ধসের শঙ্কায় চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতির উচ্ছেদ শুরু হতে যাচ্ছে।
দুই সপ্তাহের এই উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে সোমবার।
জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও ওয়াসা কর্তৃপক্ষের সম্মিলিত এই অভিযান বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোডের দুই পাশের পাহাড়ে উচ্ছেদের মধ্য দিয়ে শুরু হবে।
চট্টগ্রামের পাহাড় ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত উপকমিটির সদস্যসচিব ও পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম নগরের পরিচালক নুরুল্লাহ নুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সোমবার বায়েজিদ সড়কের পাহাড়ে অভিযানের মধ্য দিয়ে উচ্ছেদ শুরুর সব প্রস্তুতি আমরা সম্পন্ন করেছি। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন পাহাড়ে অভিযান চালানো হবে।’
তিনি বলেন, ‘যেসব পাহাড়ে গড়ে ওঠা বসতি নিয়ে মামলা রয়েছে, সেগুলোর উচ্ছেদ আপাতত বন্ধ থাকবে। উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা অভিযানে উপস্থিত থাকবেন।’
২০১৫ সালের ১৮ জুলাই বৃষ্টির সময় নগরের বায়েজিদ এলাকার আমিন কলোনিতে পাহাড়ধসে তিনজন নিহত হয়। একই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ থানার মাঝিরঘোনা এলাকায় পাহাড়ধসে মা-মেয়ে মারা যায়।
চট্টগ্রামে পাহাড়ধসের সবচেয়ে বড় ঘটনা ঘটে ২০০৭ সালের ১১ জুন। মারা যায় ১২৭ জন। এরপর পাহাড় ব্যবস্থাপনায় একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হয়।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের স্টাফ অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুক জানান, পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাসরতদের সরিয়ে নেয়ার জন্য পাহাড়গুলো যেসব প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন, তাদের চিঠি পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসন।
পাশাপাশি তাদের বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী ও কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির মহাব্যবস্থাপকের (বিপণন) কাছে চিঠি দেয়া হয়। উচ্ছেদের আগে ওই সব পাহাড়ে মাইকিং করা হচ্ছে।
চট্টগ্রামের পাহাড় ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত কমিটির তথ্য অনুযায়ী, নগরের ২৫টি পাহাড়ে এক হাজারের বেশি পরিবার ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। এর মধ্যে ২০১৯ সালে করা একটি তালিকা অনুযায়ী ১৭ পাহাড়ে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে ৮৩৫টি পরিবার।
এরপর সিডিএর বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোড নির্মাণের সময় নতুন করে ১৬টি পাহাড় কাটা হয়। সেখানকার আটটি পাহাড়ে নতুন করে অবৈধ বসতি গড়ে উঠেছে।