বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লকডাউনের আগে রাজশাহীর বাজারে হুড়োহুড়ি

  •    
  • ১১ জুন, ২০২১ ২১:৫৬

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন দেয়া হলেও সকাল থেকে বাজারগুলোতে নাগরিকদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। মাস্ক থাকলেও হুড়োহুড়ি করে বাজার করায় ছিল না শারীরিক দূরত্ব মানার বালাই।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় শুক্রবার বিকেলে লকডাউন শুরুর আগে সকাল থেকেই বাজারগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। সবাই চার-পাঁচ দিনের বাজার একবারে করায় বিকেলের আগেই শেষ হয়ে যায় অনেক পণ্য। এ সুযোগে দামও ছিল চড়া।

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন দেয়া হলেও সকাল থেকে বাজারগুলোতে নাগরিকদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। মাস্ক থাকলেও হুড়োহুড়ি করে বাজার করায় ছিল না শারীরিক দূরত্ব মানার বালাই।

রাজশাহীতে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় বৃহস্পতিবার রাতে জরুরি সভায় শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেন বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার রাতেই জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে ১৭ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত সিটি করপোরেশন এলাকার সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, শপিংমল, রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকবে। জরুরি সেবা ছাড়া কোনো যানবাহনও চলবে না। কেউ শহর ছাড়তে বা ঢুকতে পারবে না।

লকডাউনের খবর জেনে শুক্রবার সকাল থেকেই বাজারে ভিড় বাড়তে শুরু করে। সকাল সাড়ে ১০টার দিক থেকে শেষ হতে শুরু করে সবজিসহ বিভিন্ন পণ্য। নগরীর বড় তিন বাজার সাহেব বাজার, লক্ষ্মীপুর ও কোর্ট বাজারেই ছিল ক্রেতাদের বাড়তি ভিড়।

ব্যবসায়ীরা জানান, রাজশাহীতে সাধারণত শুক্রবার একটু বাড়তি বাজার হয়। ছুটির দিনে অনেকেই একটু বেশি কেনাকাটা করে। সাত দিনের লকডাউনের কারণে মানুষ আরও বেশি পণ্য কিনেছে। এ কারণে অনেকের সবজি সকালেই বিক্রি হয়ে গেছে। বেলা করে এসে অনেকেই সবজি পাননি।

রাজশাহীর সাহেব বাজারের সবজি ব্যবসায়ী আলাল উদ্দিন জানান, শুরুতেই বাজারে চাপ বেশি ছিল। বেলা একটু বাড়তেই শেষ হতে শুরু করে সবজি। এক ঘণ্টার মধ্যেই তার সব সবজি বিক্রি হয়ে যায়। পরে তিনি আড়তে গিয়ে বাড়তি সবজি আনেন। সেগুলোও দ্রুত শেষ হয়ে যায়।

একই বাজারে যাওয়া ব্যবসায়ী মশিউর রহমানের হাতে ছিল মোটামুটি লম্বা তালিকা। তার গাড়িচালকের হাতে ছিল বড় দুটি বাজারের ব্যাগ।

মশিউর বলেন, ‘আগের শুক্রবার বাজার করে রেখেছি। লকডাউনের খবর শোনার পর আবার বাড়তি কিছু কিনে রাখার জন্য বাজারে এসেছি। বলা তো যায় না, যদি লকডাউন বেড়ে যায়। তাই বাড়তি কিছু কিনে রাখাই ভালো।’

বিকেলে শালবাগান বাজারে যাওয়া তোহরু বেগম বলেন, ‘আমরা আসলে বুঝছি না কতদিন লকডাউন থাকবে। আর লকডাউনে বাজারে আসতে পারব কি না, সেটাও নিশ্চিত হতে পারছি না। এ কারণে লকডাউন শুরুর আগেই কিছু অন্তত কিনে নিয়ে যাচ্ছি।’

দুই হাতে বাজারের ব্যাগ নিয়ে তিনি বলেন, ‘যেসব জরুরি বাজার করলাম, তাতে অন্তত ৪-৫ দিন চলে যাবে। এখন দেখি, তার পরে আবার যদি কিছু লাগে সময় বুঝে ব্যবস্থা করব।’

হড়গ্রাম বাজারের ক্রেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘করোনার খারাপ পরিস্থিতি। তার ওপরে লকডাউন। কয়েক দিনের জন্য ডাল, পেঁয়াজ, আলু ও সবজি কিনে নিয়ে যাচ্ছি। লকডাউন কত দিন থাকে, বলা তো যায় না।’

তিনি অভিযোগ করেন, সুযোগ বুঝে দাম কিছুটা বাড়তি রাখছেন বিক্রেতারা।

সাহেব বাজার মাস্টারপাড়ায় শুক্রবার দিনের শুরুতেই কিছু পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন বিক্রেতারা। এরপরও দুপুরের মধ্যেই বেচাকেনা শেষ করেন অনেক ব্যবসায়ী। সবজি ছাড়াও এদিন দাম চড়া ছিল মাছের। বেশির ভাগ মাছের কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেশি রেখেছেন বিক্রেতারা।

মাছ বিক্রেতা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘গাড়িঘোড়া বন্ধের কারণে বাজারে মাছের আমদানি কম। তার ওপর লকডাউন। বাজারে ক্রেতার সংখ্যা বেশি। এ জন্য বাজারের মাছ দুপুরের মধ্যেই প্রায় শেষ হয়ে গেছে। দাম এ জন্য কিছুটা বেশি।’

তবে মুরগি ও গরুর মাংসের দাম মোটামুটি আগের দিনের মতোই ছিল। স্থির রয়েছে চালের দাম।

রাজশাহী মহানগর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফাইজুল ইসলাম বলেন, চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ ইত্যাদির সরবরাহে ঘাটতি নেই। মানুষ আতঙ্কিত হয়ে কেনাকাটা করছে। তাই কিছু ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়ে বাড়তি লাভের চেষ্টা করেছে হয়তো। চাহিদা বাড়লে দাম তো বাড়বে।

এ বিভাগের আরো খবর