বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় গাজীপুরের টঙ্গীতে ফাতেমা আক্তার সুমিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। আসামি সৈজ উদ্দিন খানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানানো হয়।
টঙ্গী পূর্ব থানায় বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার হাসিবুল আলম।
পরে সৈজ উদ্দিন গাজীপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ইলিয়াসুর রহমানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক শেখ সজল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত মঙ্গলবার মৌলভীবাজারের বড়লেখা থানার গোবিন্দপুর গ্রাম থেকে সৈজ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাড়ি ঝালকাঠির সদর থানার নাগপাড়া গ্রামে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নিজ বাসায় খাবার রান্না করে টঙ্গীর দত্তপাড়া এলাকার বিভিন্ন মেসে সরবরাহ করতেন ৩০ বছরের ফাতেমা। খাবার সরবরাহের সূত্রে বছর চারেক আগে তার সঙ্গে ৭০ বছরের সৈজ উদ্দিনের পরিচয় হয়।
বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া ফাতেমাকে এরপর থেকে প্রায়ই প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দিতেন সৈজ উদ্দিন। তবে তাতে সাড়া দেননি ফাতেমা।
সম্প্রতি সৈজ উদ্দিন জানতে পারেন এক যুবকের সঙ্গে ফাতেমার প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে সৈজ উদ্দিন ছুরিকাঘাতে ফাতেমাকে হত্যা করেন।
অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার হাসিবুল জানান, গত ১৬ মে ভোর সাড়ে ৬টার দিকে ফাতেমা বাসা থেকে কাজের জন্য বের হন। দত্তপাড়া হাউজবিল্ডিং এলাকার পৌঁছালে সৈজ উদ্দিন তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ওই দিনই ফাতেমার মেয়ে তুলি টঙ্গী পূর্ব থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সৈজ উদ্দিনের অবস্থান শনাক্ত করে তাকে গ্রেপ্তার করে।
তার দেয়া তথ্যে দত্তপাড়ায় তার পুত্রবধূর ভাড়া বাসার রান্নাঘর থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরিও উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের পর সৈজ উদ্দিন পাইলিংয়ের কাজ নিয়ে প্রথমে নেত্রকোণা যান। সেখান থেকে অন্য রাজমিস্ত্রিদের সহায়তায় পল্লী বিদ্যুতের অফিস নির্মাণ কাজের শ্রমিক হিসেবে মৌলভিবাজারের বড়লেখায় গিয়ে গা ঢাকা দেন।