চাঁদাবাজি ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করে মানহানি করায় দৈনিক মানবজমিনের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি খাইরুল ইসলাম সোহাগ ও তার সহযোগী শফিক মুন্সীর বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর অশ্বিনী কুমার টাউন হলের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী ও জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড পাওয়া সামাজিক সংগঠন জাগ্রত তারুণ্যের প্রতিষ্ঠাতা শাহবাজ মিয়া শোভন।
তিনি বলেন, ‘চাঁদা চেয়ে না পেয়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ করায় ক্যাম্পাসের হলুদ সাংবাদিক খাইরুল ইসলাম সোহাগ ও তার সহযোগী শফিক মুন্সীর বিচার দাবিতে আজকের এই মানববন্ধন কর্মসূচি।
‘সোহাগের কুচক্রী মহল সাংবাদিকতার নামে অনৈতিকভাবে অসত্য সংবাদ করার ভয় দেখিয়ে অনেক দিন ধরে চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে। এই চক্রটি চাঁদাবাজির একটি নতুন সংজ্ঞা আবিষ্কার করেছে। মিষ্টি খেতে ৫ হাজার টাকা চেয়েছিল তারা। আমি একজন ছাত্র, এত টাকা দিতে না পারায় আমার বিরুদ্ধে মনগড়া তথ্য প্রচার করেছে। যার সকল তথ্য-উপাত্ত ও প্রমাণ সাংবাদিক মহল ও যথাযথ কর্তৃপক্ষকে আমি দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই কুচক্রী মহল আমার সম্পর্কে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও অসত্য ভিত্তিহীন তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে মানহানি ও সাইবার বুলিংয়ের মাধ্যমে হেনস্তা করে আসছে। আমরা সোহাগ এবং শফিক মুন্সীর কঠোর বিচার দাবি করছি। কেননা এরা ক্যাম্পাসটাকে এক ধরনের জিম্মি করে রেখেছে হলুদ সাংবাদিকতার মাধ্যমে।’
এদিকে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, ভিত্তিহীন অভিযোগ করার প্রতিবাদে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) সামনে মানববন্ধন করেছেন সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। এ সময় অভিযুক্ত শাহবাজ মিঞা শোভনকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন তারা।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় মানববন্ধনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজি হাফিজুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী শাহবাজ মিঞা শোভন দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। গত মার্চে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর এক শিক্ষার্থীর মেসে গভীর রাতে হামলার ঘটনায় দোষী হিসেবে অভিযুক্ত।
সেই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে যে অভিযোগ করা হয়েছে সেটির সাক্ষী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় সাংবাদিক শফিক মুন্সী।
এ ছাড়া গত ৬ জুন দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় শাহবাজ মিঞা শোভনের বিরুদ্ধে একটি সংবাদ পরিবেশন করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জালিয়াতির বিষয় নিয়ে ক্যাম্পাসের একটি সামাজিক সংগঠনের অভিযোগের ভিত্তিতে নিউজটি করা হয়। যেখানে শোভনের যথাযথ বক্তব্য নেন পত্রিকাটির বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি খাইরুল ইসলাম সোহাগ৷
এসব কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে ও প্রতিহিংসার অংশ হিসেবে বিভিন্ন মাধ্যমে শফিক মুন্সী ও খাইরুল ইসলাম সোহাগের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক মিথ্যাচার ও মানহানিকর বক্তব্য দিয়ে আসছে শাহবাজ মিঞা শোভন। তার এমন আচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যেমন অপমানকর, তেমনি দুজন সাংবাদিককে বিনা কারণে হেনস্তার শামিল।
মানববন্ধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা।
সেখানে দাবি করা হয়, অনতিবিলম্বে শোভনের করা অভিযোগটি খারিজ করতে হবে, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেয়ায় দ্রুত শাহবাজ মিঞা শোভনকে ক্ষমা চাইতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর এক শিক্ষার্থীর মেসে হামলার ঘটনায় শোভনের বিরুদ্ধে চলমান বিচারকাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আহমেদ মিলান, বাংলা বিভাগের আল আমিন, সয়েল সায়েন্স বিভাগের সিয়াম জামান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী শফিক মুন্সীসহ অন্যরা।