সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাসকে ৭ মাস পর চট্টগ্রাম কারাগার থেকে কক্সবাজার কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম কারাগারের জেলার খন্দকার গোলাম হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে কক্সবাজার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় প্রদীপকে নিয়ে পুলিশ ভ্যান চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেয়। মূলত একটি মামলার হাজিরা জন্য প্রদীপকে ৭ মাস চট্টগ্রাম কারাগারে রাখা হয়েছিল।
গত ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান।
শুরুতে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সিনহা তল্লাশিচৌকিতে বাধা দেন। আর তিনি পিস্তল বের করলে চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে।
তবে পুলিশের বক্তব্য নিয়ে সে সময় প্রশ্ন ওঠে। আর সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস মামলা করেন নয়জনের বিরুদ্ধে।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে। ওসি (বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার দাসকে করা হয় দুই নম্বর আসামি। মামলার তিন নম্বর আসামি করা হয় টেকনাফ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিতকে।
এরপর অভিযুক্ত সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তদন্তে নেমে র্যাব স্থানীয় তিনজন, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্য এবং প্রদীপের দেহরক্ষীসহ মোট ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে।
সে সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি দল তদন্ত করে। যদিও সে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের ফোরাম রাওয়া উচ্চকিত হয়। আর তদন্তের ভার দেয়া হয় র্যাবকে।
এ ঘটনায় সে সময় কক্সবাজারের পুরো পুলিশ প্রশাসনকে পাল্টে দেয়া হয়।
চার মাস ১০ দিন তদন্ত শেষে সংস্থাটি জানিয়েছে, মেজর সিনহা ভ্রমণ বিষয়ে ভিডিও তৈরির জন্য কক্সবাজার গেলেও সেখানে গিয়ে মাদক পাচার বিষয়ে কাজ করেন। আর তখন এর সঙ্গে ওসি প্রদীপের সম্পৃক্ততার তথ্য পান। আর এ নিয়ে তিনি প্রদীপের সাক্ষাৎকার নিতে যান। তখনই প্রদীপ তাকে হুমকি দেন। পরে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়।