জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলী হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) অপসারণসহ ৪ দফা দাবিতে গাইবান্ধা সদরে চলছে আধা বেলার হরতাল।
‘হাসান হত্যার প্রতিবাদ মঞ্চ’ নামের সংগঠন এই হরতাল ডেকেছে। হরতাল পালন করতে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ রেখেছে। শহর থেকে সকালে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। রাস্তায় যানবাহনও প্রতিদিনের তুলনায় কম।
হরতাল সমর্থনকারীরা ট্রাফিক মোড়, সার্কুলার রোড় ও রেলগেট এলাকায় খণ্ড খণ্ড মিছিল করেছে। রাস্তার ওপর টায়ার জ্বালিয়ে পিকেটিংও করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে।
হাসান আলীর বাড়ি জেলা শহরের থানাপাড়া এলাকায়। তিনি আফজাল সুজের ডিলার ছিলেন। শহরের স্টেশন রোডে তার দোকান আছে। গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানার বাসা থেকে গত ১০ এপ্রিল হাসানের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরিবারের অভিযোগ, গত ৫ মার্চ হাসানকে অপহরণ করেন রানা। এরপর বিভিন্ন জায়গায় তাকে আটক রেখে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পসহ সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন। এ ছাড়া তার পরিবারের কাছেও পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। টাকা দিতে না পারায় তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়।
মরদেহ উদ্ধারের পর স্থানীয় লোকজন রানাকে গণপিটুনি দেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে রানাকে আটক করে।
তাদের অভিযোগ, রানা সুদের ব্যবসা করতেন। সুদ-সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই তিনি হাসানকে অপহরণ করেন।
এ ঘটনায় হাসানের স্ত্রী সদর থানায় মাসুদ রানাসহ তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ঘটনার পর মাসুদ রানাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
মরদেহ উদ্ধারের পরদিন জেলা আওয়ামী লীগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মাসুদ রানাকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়।
এখন পর্যন্ত এই মামলার আর কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তার, দায়িত্ব গাফিলতির অভিযোগে সদর থানার ওসির অপসারণ, হাসান হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও জেলার অবৈধ দাদন ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য বন্ধের দাবিতে ৩১ মে এই হরতালের ডাক দেয় ‘হাসান হত্যার প্রতিবাদ মঞ্চ’।
এই সংগঠনে আছেন, জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা।