প্রজেক্ট হিলসার অনেক আগে থেকেই বরিশালের পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ইলিশ মাছের আদলে তৈরি হয়েছে একটি রেস্টুরেন্ট। প্রচুর দর্শনার্থীও যান প্রতিনিয়ত, তবে করোনার জন্য সম্প্রতি কুয়াকাটায় পর্যটকে নিষেধাজ্ঞা থাকায় তালা ঝুলছে ওই ইলিশ রেস্টুরেন্টে।
বিশাল আকৃতির ‘ইলিশ রেস্টুরেন্ট’ কুয়াকাটার ইলিশ পার্কের মধ্যেই। স্বাভাবিক সময়ে সেখানে বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি থাকে ইলিশের ২০ আইটেম।
এই ইলিশ রেস্টুরেন্টের মালিক রুমান ইমতিয়াজ তুষারের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা।আরও পড়ুন: ‘প্রজেক্ট তেলাপিয়া’ ভবনটি কোথায়
তিনি বলেন, ‘২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর কুয়াকাটায় দুই বিঘা জমির ওপর ইলিশ পার্ক নির্মাণ করা হয়। এর ভেতরেই গড়ে তোলা হয়েছে ইলিশের আদলে রেস্টুরেন্ট। দৈর্ঘ্য ৭২ ফুট এবং প্রস্থে ১৮ ফুটের এই রেস্টুরেন্টে একসঙ্গে ৫০ জন বসে খাবার খেতে পারেন। এখানে ২০ রকমের ইলিশ রান্না, ৩০ রকমের ভর্তা আর অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের আইটেম রয়েছে।
‘সামুদ্রিক মাছটা গ্রাহকের চাহিদার ওপর কেনা হয়ে থাকে। পানি ছাড়া কোনো খাদ্য দ্রব্যই আমরা ফ্রিজিং করি না। প্রতিদিন সকালে বাজার করে সব টাটকা খাবার পরিবেশন করা হয়।’
তুষার বলেন, ‘আমাদের এখানে আরও একটু ব্যতিক্রম রয়েছে। কোনো প্লাস্টিক ব্যবহার হয় না আমাদের পার্ক এবং রেস্টুরেন্টে। খাবার পরিবেশন করা হয় মাটির শানকিতে এবং চা বা কফি দেয়া হয় নারিকেলের মালায় করে।
‘গলাকাটা দাম আমরা গ্রাহকের কাছ থেকে রাখি না। বাজারদর অনুযায়ী খাদ্যপণ্যের দাম ওঠা-নামা যেমন করে, তেমনিই আমাদের ইলিশ রেস্টুরেন্টে খাদ্যের দাম থাকে।’
ইলিশের মেন্যুর দামের হিসাব দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে ইলিশ স্পেশাল সাইজ ১৫০ টাকা, ইলিশ নরমাল সাইজ ১০০ টাকা, সরষে ইলিশ স্পেশাল ১৮০ টাকা, ইলিশ ভুনা ১২০ টাকা, ইলিশ কারি ১২০ টাকা, নোনতা ইলিশ ১২০ টাকা, সবজি ইলিশ ১২০ টাকা, ইলিশ ডাল ১০০ থেকে ১২০ টাকা, ইলিশ ফুল ১০০০ টাকার মধ্যে (সাত শ থেকে আট শ গ্রাম ওজন) এবং ইলিশ বারবিকিউ ১০০০ টাকার মধ্যে। মাঝেমধ্যে ওজনভেদে দাম কিছুটা বেশি-কম হয়।’
তিনি জানান, ইলিশ পার্কে ইলিশ রেস্টুরেন্টের পাশাপাশি থাকার জন্য রয়েছে সাতটি কটেজ, যেখানে ৩৫ জন থাকতে পারেন। এ ছাড়া শিশুদের বিনোদনের জন্য বিভিন্ন পশুপাখির ভাস্কর্য তৈরি করা রয়েছে।
তুষার বলেন, ‘আশপাশের বন থেকে যেসব প্রাণী লোকালয়ে চলে আসে, সেগুলো উদ্ধার করে আমরা চিকিৎসা দিয়ে ইলিশ পার্কে তিন মাস রেখে দিই। এরপর প্রাণীগুলো আবার বনে ছেড়ে দেয়া হয়। এর মধ্যে মেছোবাঘ থেকে শুরু করে নানা প্রাণী ছিল ইলিশ পার্কে। বর্তমানে একটি সজারু এবং একটি বানর রয়েছে।’
ইলিশ পার্ক এলাকায় কনসার্ট পুরোপুরি নিষিদ্ধ, যারা এখানে রাত্রিযাপন করেন তাদের জন্য রাতে বসে বাউল গানের আসর।
তুষার বলেন, ‘নিরিবিলি পরিবেশ বিবেচনা করেই এই ইলিশ পার্ক তৈরি করা হয়েছে। আমাদের ইলিশ রেস্টুরেন্ট দেখতেই মূলত বেশি মানুষ এখানে আসেন।’