রাজশাহীতে করোনা সংক্রমণের মাঠের চিত্র জানতে বিভিন্ন পয়েন্টে শুরু হয়েছে করোনা অ্যান্টিজেন টেস্ট। নগরীর ১৮টি পয়েন্টে এসব টেস্ট করা হচ্ছে। তবে টেস্ট বাড়াতে ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য কিনতে হলে করতে হবে কারোনা পরীক্ষা। এ জন্য করোনা টেস্ট বুথের পাশেই টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সোমবার থেকে জেলায় র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা চলছে। এতে সহায়তা দিচ্ছে সিটি করপোরেশন ও সিভিল সার্জন অফিস। করোনা পরীক্ষায় মানুষের সাড়া কিছুটা কম। এ কারণে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করোনা পরীক্ষার বুথের পাশে টিসিবির পণ্য বিক্রির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেখানে সবাই করোনা পরীক্ষা করে টিসিবির পণ্য কিনবেন।
বেশ কয়েকটি পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব কটি টিসিবি পয়েন্টের পাশে রাখা হচ্ছে করোনা টেস্টের বুথ। সেখানে মাইকিং করে টেস্টের বিষয়ে বলছেন পুলিশ সদস্যরা। টেস্ট করলেই মিলছে পণ্য। অনেকেই আবার বলছে টিসিটির পণ্য কিনলে করোনা পরীক্ষা ফ্রি। গত সোমবার থেকে টিসিবির পণ্য কেনার সঙ্গে করোনা টেস্ট করানোর বিষয়টি সংযুক্ত করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
রাজশাহী নগরের দড়িখরবোনা এলাকার সেলিনা আক্তার শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান চত্বর এলাকার টিসিবির গাড়ি থেকে পণ্য কিনতে আসেন। তাকে প্রথমে বলা হয়, করোনার পরীক্ষা করিয়ে আসেন। পাশেই একটি বুথে লাইনে দাঁড়িয়ে করোনা পরীক্ষা করার পরই সেলিনা পান টিসিবির পণ্য।
একই অবস্থা রাজশাহী সাহেব বাজার টিসিবির পয়েন্টের। সেখানে পণ্য কিনতে যান সাব্বির হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমি স্বাভাবিক নিয়মে পণ্য কিনতে লাইনে দাঁড়াতে যাই। পরে পুলিশ বলে টেস্ট না করলে টিসিবির পণ্য কিনতে পারব না। ফলে চিন্তা হয় টাকা তো নাই টেস্ট করার। বুধে গিয়ে জানতে পারি টেস্ট করতে টাকা লাগে না। ফ্রিতে টেস্ট করে সেখান থেকে টিসিবির পণ্য কিনি।’
টিসিবির রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান রবিউল মোর্শেদ বলেন, ‘রাজশাহীতে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। এ বিষয়ে আমরা জেলা প্রশাসনের নির্দেশেই পণ্য বিক্রি করছি। করোনার পরীক্ষা বাড়ানোর জন্য বুথের কাছে টিসিবির পণ্য বিক্রির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মানুষ করোনা পরীক্ষা করেই পণ্য কিনছেন।’
তিনি বলেন, ‘এটির জন্য আমাদের বিক্রিতে কোনো প্রভাব পড়বে না। আমি মনে করি এটি ভালো বিষয়।’
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শরিফুল হক বলেন, টিসিবির পণ্য যারা কিনবে, তারা যাতে আগে টেস্ট করে। যাতে আমাদের টেস্ট বেশি হয় এ জন্য এটি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘মার্কেটগুলোতেও টেস্ট করা হবে। এটি কঠোরভাবেই করা হবে। যদি কেউ টেস্ট না করে, তবে আমরা সেই দোকানই বন্ধ করে দেব।’
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবার নগরীর ১৩টি পয়েন্টে তারা ভ্রাম্যমাণ বুথের মাধ্যমে করোনা টেস্ট করেছে। এদিন তারা ৯৭৭ জনের করোনা পরীক্ষা করেছে। এর মধ্যে ১২৬ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। শনাক্তের হার ১৩ ভাগ।