ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার মেড্ডায় মাকসুদা সুলতানা ঝিনুক নামে এক গৃহবধূকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে মঙ্গলবার সকালে ঝিনুককে নিয়ে যান এক ব্যক্তি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে সেই ব্যক্তিকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ঝিনুকের বড় বোন তানিয়া আক্তার অভিযোগ করেন, নির্যাতনের পর ঝিনুককে হত্যা করে মরদেহ হাসপাতালে ফেলে যান শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তাদেরকে জানানো হয়, ঝিনুক আত্মহত্যা করেছেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ঝিনুককে হাসপাতালে নেয়া ব্যক্তি জরুরি বিভাগের টিকিট কাটেন রহিম মিয়া নামে। ঝিনুকের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ঝিনুকের পরিবারের সদস্যরা জানান, পাঁচ বছর আগে জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের মোটরপার্টস ব্যবসায়ী সোহেল মিয়ার সঙ্গে কসবা উপজেলার বাদৈর গ্রামের ঝিনুকের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মেড্ডা এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন। তাদের তিন বছরের একটি ছেলে রয়েছে।
তাদের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য ঝিনুককে নির্যাতন করতেন স্বামী, শাশুড়িসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ নিয়ে এলাকায় একাধিক সালিশও হয়েছে।
ঝিনুকের বোন তানিয়া জানান, সোহেল আগে একটা বিয়ে করেছিলেন। ওই স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তিনি ঝিনুককে বিয়ে করেন। সম্প্রতি সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে ফের সম্পর্কে জড়ান তিনি। বিষয়টি ঝিনুক জেনে যাওয়ায় এবং যৌতুকের দাবিতে তাকে প্রায়ই মারধর করতেন সোহেল, তার মা ও বোন।
খালা লাকি আক্তার অভিযোগ করেন, পারিবারিক নির্যাতনের কারণে সোহেলের আগের স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়। এরপর তিনি ঝিনুককে বিয়ে করেন। যৌতুকের জন্যই সোহেল ও তার পরিবারের লোকজন ঝিনুককে হত্যা করেছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম জানান, মৌখিক অভিযোগ পেয়ে গৃহবধূর স্বামীর বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও জানান, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।