জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে মৃত্যুর চার বছর পর সুদের টাকা দাবি করে ঋণগ্রহীতার স্ত্রী ও দুই কন্যাকে নির্যাতন এবং বাড়ি থেকে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার আওলাই ইউনিয়নের সুকানপুকুর গ্রামের মৃত আবদুল খালেকের মেয়ে খালেদা খাতুন এ অভিযোগ করেন।
তিনি জানান, নির্যাতনে তারা আহত হলে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে তাদের ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পরে তারা বাড়ি ফিরে আসেন।
খালেদা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে একই উপজেলার রহমতপুর গ্রামের দাদন ব্যবসায়ী গোলজার মন্ডল ও তার ছেলে লাবুসহ কয়েকজন মোটরসাইকেল নিয়ে তার বাবার বাড়িতে যান। তারা দাবি করেন, তার বাবা আবদুল খালেক জীবিত থাকা অবস্থায় গোলজারের কাছ থেকে দাদনের টাকা নিয়েছিলেন, যা সুদে-আসলে এখন ২ লাখ টাকা হয়েছে।
খালেদা বলেন, ‘আমার বাবা চার বছর আগে মারা গেলেও এ ব্যাপারে আমাদের পরিবারের কেউ কিছুই জানে না। দাবি করা টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় পরে তারা আমার মা, আমাকে ও আমার বোন পাপিয়া খাতুনকে মারধর করেন।
‘এ ছাড়া তারা আমাদের ঘরে থাকা ৭৫ হাজার টাকা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, এক ভরির স্বর্ণের চেইন, কানের দুল ও আংটি কেড়ে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় হুমকিও দিয়ে যান তারা।’
দাদন ব্যবসায়ী গোলজার মন্ডল
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গোলজার অনেক বছর ধরে সুদের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ১ হাজার টাকায় সপ্তাহে তাকে ১০০ টাকা সুদ দিতে হয়।
গোলজার অবশ্য তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আবদুল খালেক বেঁচে থাকতে আমার কাছ থেকে সাদা চেক রেখে ২ লাখ ২৬ হাজার টাকা ঋণ নেন। সেই টাকা পরিশোধ না করেই তিনি মারা গেছেন।
‘সম্প্রতি সেই টাকার সুদে-আসলে ৫ লাখ টাকার চেক লিখে ব্যাংকে গেলে খালেকের অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকায় তুলতে পারিনি। এ অবস্থায় চেকটি আমার এক আত্মীয়কে দিই। টাকাগুলো তোলার জন্য সেই আত্মীয় খালেকের বাসায় গিয়েছিলেন কি না এ বিষয়ে বলতে পারব না।’
পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পলাশ কুমার দেব জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।