চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানকে সাজাতে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নতুন প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার আগেই হেলে পড়েছে এর সীমানাদেয়াল। এতে দেয়ালের নিচের দিকের কিছু অংশ ভেঙে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নবনির্মিত তিনটি টেরাকোটার ম্যুরাল।
রোববার সকালে দুই ঘণ্টা টানা বৃষ্টির কোনো একসময় দেয়ালসংলগ্ন পাহাড়ের চাপে সীমানাদেয়াল হেলে পড়ায় এর নিচের দিকের কিছু অংশ ভেঙে যায় বলে নিউজবাংলাকে জানান জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জালাল উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘লালদীঘি ময়দানের পাহাড়সংলগ্ন সীমানাদেয়ালটি আমাদের প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ হয়নি। এটি সিটি করপোরেশন বা গণপূর্ত অধিদপ্তর নির্মাণ করেছিল। তবে সীমানাদেয়ালের টেরাকোটার ম্যুরালগুলো আমরা বসিয়েছি। এর আগে অবশ্য দেয়ালের কোনো ত্রুটি ছিল না। কিন্তু সম্প্রতি ময়দানের এই সীমানাদেয়াল-সংলগ্ন পাহাড়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) একটি বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। ওই ভবনটির পাইলিংয়ের কারণে ওই দেয়ালে চাপ পড়ে। এত দিন মাটি শুকনা থাকায় কোনো সমস্যা হয়নি, কিন্তু বৃষ্টি হওয়ায় দেয়ালসংলগ্ন ওই দেয়ালে মাটির চাপ পড়ায় দেয়ালটি হেলে পড়ে। এতে আমাদের তিনটি ম্যুরাল ভেঙে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ কাজ শেষ করে আমাদের বুঝিয়ে দেয়নি। তাই ক্ষতিগ্রস্ত অংশ এই প্রকল্পের অধীনেই সংস্কার করা হবে। তা ছাড়া আমি সিএমপিকে জানিয়েছি, তাদের নির্মাণাধীন ভবনের কারণে যেন আমাদের প্রকল্পের আর কোনো ক্ষতি না হয়। সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন তারা।’
সিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. কাজী হুমায়ুন রশীদের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এর আগে ২০২০ সালে লালদীঘির ময়দানকে ঢেলে সাজাতে একটি প্রকল্প হাতে নেয় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার এই প্রকল্পের কাজ এরই মধ্যে ৯৫ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জালাল উদ্দিন।
চলতি মাসের মধ্যেই প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধন করার কথা বলে জানান তিনি।
ময়দানের দেয়ালের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএস ব্রাদার্স সিন্ডিকেটের মালিক গোলাম মর্তুজা টুটুল বলেন, ‘সিএমপি হেডকোয়ার্টার্সের একটি ভবন নির্মাণের পাইলিং ও অন্যান্য কাজের কারণে সীমানাদেয়ালে চাপ আসে, বৃষ্টির পানির সঙ্গে এই চাপ বাড়লে দেয়ালটি হেলে পড়ে। তবে এই দেয়ালটি আমরা তৈরি করিনি, আমরা শুধু ওই দেয়ালে টেরাকোটার ম্যুরালগুলো তৈরি করেছি। দেয়াল হেলে পড়ায় আমাদের তিনটি ম্যুরাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এটা সংস্কারের সময় আরেকটা ম্যুরাল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সিএমপির সাথে আমাদের কথা হয়েছে। তারা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত দেয়াল সংস্কার করে দেবেন বলেছেন। আর তারা যদি সংস্কার নাও করে প্রকল্প যেহেতু এখনো শেষ হয়নি, দ্রুততম সময়ে আমরা সংস্কার করে নিব।’