বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গ্রামের হাটে সিসি ক্যামেরা

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ৭ জুন, ২০২১ ১২:০৮

হাটবাজারে বিপুল জনসমাগমের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই অপরাধীদের চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। প্রমাণের অভাবে অনেক সময়ই অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। তাদের চিহ্নিত করা ও নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলার সব হাটবাজারকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা পুলিশ।

গুজব ছড়িয়ে ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর পাবনার বনগ্রাম বাজারে ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে চিহ্নিত চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীরা।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, চাঁদা না দেয়ায় পরিকল্পিতভাবে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে প্রকাশ্যে মন্দির ভাঙচুর ও প্রায় ২০টি দোকান লুট করা হয়।

সে সময় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুসহ সরকারের একাধিক মন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিচারের আশ্বাস দিলেও যথাযথ সাক্ষীদের হাজির না হওয়া ও প্রমাণের অভাবে ঘটনার আট বছরেও দোষী ব্যক্তিদের বিচার হয়নি।

কেবল আলোচিত এ ঘটনাটিই নয় জেলার সাঁথিয়া উপজেলার বনগ্রাম হাটে মাঝেমধ্যেই ডাকাতি, চুরি-ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটে। বনগ্রাম হাটই নয়, একই চিত্র জেলার সব বড় হাটগুলোতেই।

হাটের দিনগুলোতে এসব এলাকায় বিপুল অঙ্কের অর্থ লেনদেনকে টার্গেট করে সক্রিয় হয়ে ওঠে অপরাধীরা। তৎপর হয় মাদক কারবারির চক্রও।

পুলিশ জানায়, বিপুল জনসমাগমের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই অপরাধীদের চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। প্রমাণের অভাবে অনেক সময়ই অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। তাদের চিহ্নিত করা ও নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলার সব হাটবাজারকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা পুলিশ।

এরই মধ্যে আতাইকুলা থানার বনগ্রাম ও দুবলিয়া হাটে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে শুরু হয়েছে এ কার্যক্রম।

আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন জানান, বনগ্রাম ও আতাইকুলায় সিসি ক্যামেরার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দুবলিয়া হাটে ১৬টি ও বনগ্রামে ২৪টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।

ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় হাটের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সিসি ক্যামেরার আওতায়। আর ক্যামেরার কন্ট্রোলরুম করা হয়েছে হাটসংলগ্ন পুলিশ ফাঁড়িতে। যেখান থেকে সরাসরি বিশাল এই হাট মনিটর করছেন পুলিশ সদস্যরা।

তিনি বলেন, সিসি ক্যামেরা স্থাপনের ফলে বিশাল এই হাটের পুরোটাই থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারিতে। ফলে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সেখানে পৌঁছাতে পারবেন।

সরেজমিনে বনগ্রাম হাটে দেখা যায়, সিসি ক্যামেরা স্থাপনের ফলে বিশাল এ হাটের কার্যক্রম আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারিতে থাকায় বাজারের ব্যবসায়ীরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ বোধ করছেন।

বনগ্রাম হাটের ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন জানান, প্রতি হাটবারে বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ, পাটসহ নানা কৃষিপণ্য নিয়ে আসে। তাঁতসমৃদ্ধ এলাকা হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা লুঙ্গি, শাড়ি কিনতে আসেন।

প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১০০ কোটি টাকার লেনদেন হয় এই হাটে। তবে ব্যবসায়ীরা প্রায়ই চাঁদাবাজি, চুরি, ছিনতাইসহ নানান অপরাধ কর্মকাণ্ডের শিকার হন। জনবহুল এই হাটে অপরাধীদের শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তবে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করায় ব্যবসায়ীরা এখন আগের চেয়ে অনেক নিরাপদ।

বনগ্রাম বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আল মামুন কবির রিপন বলেন, ‘আমাদের হাটে প্রায় ৪০০ ব্যবসায়ী আছেন, যাদের একটি বড় অংশ হিন্দু সম্প্রদায়ের। আমাদের মধ্যে কোনো ধর্মীয় ভেদাভেদ নেই। অথচ, বহিরাগত ও কিছু সুযোগসন্ধানী অপরাধী এখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেন।

‘অতীতে প্রমাণ না থাকায় অনেকেই পার পেয়ে গেছে। এখন শুধু বনগ্রাম হাট নয় বরং পুরো বনগ্রাম এলাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে থাকবে। এটা আমাদের জন্য ভালো খবর।’

পাবনার পুলিশ সুপার মুহিবুল ইসলাম খান বলেন, ‘অপরাধ নিয়ন্ত্রণে তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধার মধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরার কার্যকারিতা পরীক্ষিত। জেলা পুলিশ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধ করে হাট ও বাজারগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর