বরিশালের হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অস্ত্রোপচার ছাড়াই একসঙ্গে তিনটি ছেলেসন্তান হয় সেলিনা বেগম নামের এক গৃহবধূর। কিন্তু জন্মের সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর একে একে তিনটি শিশুরই মৃত্যু হয়।
হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, শনিবার বিকেল ৪টার দিকে ১০ মিনিটের ব্যবধানে তিন ছেলেসন্তান জন্ম দেন সেলিনা বেগম। তিনি হিজলার গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কালিকাপুর গ্রামের ফারুক ব্যাপারীর স্ত্রী। জন্মের পরপরই তিন নবজাতককে বরিশাল শেরই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ১০ মিনিটের ব্যবধানে একে একে তিনটি শিশুই মারা যায়। রোববার বেলা ১১টার দিকে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।
হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার শাহরাজ হায়াত জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জন্ম নেয়া তিন নবজাতকের প্রত্যেকের ওজন ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় কম। তা ছাড়া তাদের শ্বাসকষ্ট ছিল। সে কারণে জন্মের পরপরই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে তাদের মা সুস্থ্ ছিলেন।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক উত্তম কুমার সাহা জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই তিন নবজাতককে শিশু ওয়ার্ডে তাদের স্বজনেরা ভর্তি করেন। এ সময় নবজাতকদের অবস্থা খুব খারাপ ছিল। ভর্তি করা প্রথম শিশুর ওজন ১ কেজি ১৪৫ গ্রাম, দ্বিতীয় শিশুর ১ কেজি ৪৫ গ্রাম এবং তৃতীয় শিশুটির ওজন ছিল ১ কেজি ৯০ গ্রাম।
অধ্যাপক উত্তম কুমার সাহা বলেন, ‘কম ওজন ও অপরিণত বয়সে ভূমিষ্ঠ হওয়ায় তাদের শ্বাসপ্রশ্বাস নেয়ার ক্ষমতা কম ছিল। তাদের শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। তবে শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসক ও নার্সরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেন তিন শিশুকে বাঁচানোর জন্য। কিন্তু রাত সাড়ে ১১টা থেকে ১১টা ৪০ মিনিটের মধ্যে ওই তিন নবজাতক একে একে মারা যায়। যদি জন্মের পরপরই তাদের ইনকিউবেটরের মধ্যে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সম্ভব হতো, তা হলে হয়তো তাদের বাঁচানো সম্ভব হতো।’