ঢাকার সাভারে রাস্তার কাজ নিয়ে বিরোধের দ্বন্দ্বের জেরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এক নেতা অবৈধ অস্ত্র দিয়ে নিজে গুলি করার কথা অকপটে স্বীকার করেছেন।
ক্ষমতাসীন দলের নেতা শাহিন পালোয়ানের সঙ্গে দুই সাংবাদিকের এমন দুটি কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ওই নেতার দাবি, তার পাওয়া সড়কের সুয়ারেজ লাইন নির্মাণ কাজ প্রতিপক্ষ ফারুক আহমেদ জোরপূর্বক করছেন। ফারুক লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করেন। তিনি তাকে গুলি করে দেন, এই আতঙ্কে তিনি অবৈধ অস্ত্র সংগ্রহ করে ফাঁকা গুলি করেছেন।
সোমবার রাতে অভিযুক্ত আশুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক শাহিন পালোয়ানের দুটি অডিও ক্লিপস পাওয়া যায়।
প্রায় দেড় মিনিটের একটি রেকর্ডে ওই নেতাকে বলতে শোনা যায়, ‘অহনে ফারুক আমার রিজিক দানা চুরি করে। আমি মনে করেন জীবন বাঁচানোর লাইগা ওইটা করছি। আমার তো আর অস্ত্র নাই লাইসেন্স করা। আমি তো ওই জাগায় বলছি তোরা কাজ করবি না, হুনে না। আমি ফাঁকা জায়গায় গুলি করছি, কসম আল্লাহর। আমি মিথ্যা কথা জানিই না।
‘আমি বেলালরে কইছি, বেলাল গুলি তো তোরে করবার আহি নাই। ফারুকরে করবার আইছিলাম। এই পায়ের তলে গুলি করলাম ফাঁকে, ফারুকরে এটা মনে কর।’
প্রায় সাড়ে তিন মিনিটের আরেকটি রেকর্ডে আওয়ামী লীগ নেতা শাহিন বলেন, ‘ও (ফারুক) আমার কাজ জোরজবর দস্তি কইরা আইজকা পনরো দিন ধইরা কাজ করতাছে। ফারুক করতাছে এই কাজ।’
অবৈধ অস্ত্র কেন ব্যবহার করেছেন এমন প্রশ্নে বলেন, ‘ভাই জীবন বাঁচানোর জন্যে আমি এই কাজ কইরা যদি অপরাধ কইরা থাকি, তাইলে আমি অপরাধ করছি ভাই। দুই রাউন্ড করি নাই। মিথ্যা কথা। এক রাউন্ড গুলি করছি। অস্ত্রটা আমার না ভাই। এটা আমি আনাইছিলাম ভাই। মানুষরে তো বাঁচতে হইব। নাকি? সেতো ২৪ ঘণ্টা সরকারি লাইসেন্স লইয়া ঘুরে। হে আমারে গুলি কইরা দিলে?’
তবে আশুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ফারুক আহমেদকে অনেকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
আশুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যদি এই ধরনের কাজ করে থাকে আমি এটা আশা করিনি। আমার আওয়ামী লীগের লোক এই ধরনের অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করুক বা রাখুক এটা খুবই খারাপ। আমি সিনিয়র রাজনৈতিক নেতাদের বিষয় গুলো জানানো হয়েছে। আওয়ামী লীগ করি আর যেই হোক এই ধরণের অঘটন করে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
রোববার সকালে আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকায় আমতলা-বেঙ্গল মোড় সড়কের ওই গুলির পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। এসময় আটক করা হয় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতার ব্যবস্থাপক অলি শেখকে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুদীপ কুমার গোপ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কাঠগড়া এলাকার ঘটনায় ফারুক আহমেদ রাতে একটি মামলা করেছেন। মামলায় শাহিন পালোয়ানসহ ৫-৬জনকে আসামি করা হয়েছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’