বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মাকে পুড়িয়ে মারেন ছেলে’

  •    
  • ৬ জুন, ২০২১ ২১:৪৭

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালিয়া থানার ওসি (তদন্ত) আমানুল্লাহ জানান, আদালতে রাশেদ ও মিরাজ জবানবন্দিতে বলেন, গ্রামের প্রতিপক্ষ মোল্লা গ্রুপের লোকজনকে ফাঁসাতে ছালেহা বেগমকে পুড়িয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন বৃদ্ধার ছেলে ইরুপ খন্দকার। সে অনুযায়ী ২১ মে রাত ১টার দিকে বৃদ্ধার শরীরে পেট্রোল ঢেলে দেন ছেলে ইরুপ খন্দকার। রাশেদ লাইটার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হওয়ার পর রাত ৩টার দিকে তারা চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন আসেন। মিরাজ তাদের সহযোগিতা করেন।

নড়াইলের কালিয়ায় বৃদ্ধ ছালেহা বেগমকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন দুই আসামি।

আদালতে বৃদ্ধার নাতি রাশেদ ও নাতজামাই মিরাজ বলেন, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে পুত্র ইরুপ খন্দকার নিজেই পেট্রোল ঢেলে তার মা ছালেহা বেগমকে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন। হত্যার সময় রাশেদ ও মিরাজ সহযোগিতা করেন।

শনিবার বিকেলে নড়াইলের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মোরশেদুল আলমের আদালতে ১৬৪ ধারায় তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

রোববার আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালিয়া থানার ওসি (তদন্ত) আমানুল্লাহ আল বারী জানান, রাশেদ ও মিরাজ জবানবন্দিতে বলেন, গ্রামের প্রতিপক্ষ মোল্লা গ্রুপের লোকজনকে ফাঁসাতে ছালেহা বেগমকে পুড়িয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন বৃদ্ধার ছেলে ইরুপ খন্দকার। সে অনুযায়ী ২১ মে রাত ১টার দিকে বৃদ্ধার শরীরে পেট্রোল ঢেলে দেন ছেলে ইরুপ খন্দকার। রাশেদ লাইটার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হওয়ার পর রাত ৩টার দিকে তারা চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন আসেন। মিরাজ তাদের সহযোগিতা করেন।

ওসি জানান, গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার নড়াইল আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মোরশেদুল আলমের আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার ঘটনায় জবানবন্দি দেন ছালেহা বেগমের পুত্রবধূ নার্গিস বেগম ও কুলসুম বেগম। জবানবন্দিতে তারা বলেন, কুলসুমের স্বামী আরিফ খন্দকারকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ। একটি খুনের মামলার পর প্রতিপক্ষকে আরেকটি মামলা দিয়ে শায়েস্তা করতেই এই হত্যাকাণ্ড। ঘটনার রাত ১টার দিকে রাশেদ, মিরাজ, ইরুপসহ অজ্ঞাতপরিচয় দুই-তিনজন তাদের শাশুড়ি ছালেহা বেগমকে বিছানায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছেন।

রাশেদকে আগুন জ্বালাতে নার্গিস দেখেছেন বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন।আগুনে পুড়িয়ে ৭৫ বছর বয়সী ছালেহা বেগমকে হত্যার ঘটনায় তার মেয়ে মিনি বেগম ২৫ মে প্রতিপক্ষ আকসির, মনিরুল মোল্যাসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ছয়-সাতজনকে আসামি করে কালিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন।

পুলিশ জানায়, আট মাস আগে স্থানীয় বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে ছালেহা বেগমের বড় ছেলে আরিফ খন্দকারকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করে। ওই ঘটনায় আরিফের ভাই ইরুপ খন্দকার প্রতিপক্ষ আকসির মোল্যাসহ ২৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। এই মামলার আসামি রাহুল মোল্যাকে মারধর করলে ২০ মে রাহুলের মা ঝর্ণা বেগম ইরুপ খন্দকারসহ আটজনের নামে মামলা করেন। এরপরই ঘটে বৃদ্ধ ছালেহা বেগমকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা।

ওসি আমানুল্লাহ জানান, চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকেই পুলিশ নিহত বৃদ্ধার পরিবারের লোকদের প্রতি সন্দেহের তির রেখেছিল। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হলেও নজরদারিতে ছিল বৃদ্ধার পুত্র, পুত্রবধূ, নাতি, নাতজামাইসহ কয়েকজন।শনিবার এ মামলার বাদী ও আসামিপক্ষ নড়াইল প্রেস ক্লাবে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করে। মামলার বাদী মিনি বেগম সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, মামলার দুই সাক্ষী তার দুই ভাবিকে পুলিশ থানায় নিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছে।

প্রতিপক্ষের মিনা খাতুন সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ‘নিজেরা বৃদ্ধাকে হত্যা করেছে কেবল আমাদের পরিবারের লোকদের হয়রানি করার জন্য।’

ছালেহা হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তার ছেলে ইরুপ খন্দকার পলাতক রয়েছেন বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওসি আমানুল্লাহ।

নড়াইলের পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় বলেন, ‘পুলিশের একাধিক সংস্থা চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে কাজ করেছে। আমরা দ্রুত মামলাটির সমাধান করতে পারব বলে আশা করছি। হত্যাকারীদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।’

এ বিভাগের আরো খবর