ভারী বর্ষণে পাহাড়ধসের শঙ্কায় ২৫টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং করছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
জেলায় রোববার সকাল থেকে ভারী বর্ষণ শুরুর পর প্রশাসনের বিভিন্ন সার্কেলের সহকারী কমিশনাররা (ভূমি) স্থানীয় কাউন্সিলর ও পুলিশের সহায়তায় তাদের সরিয়ে নিতে মাইকিং শুরু করেন।
এদিকে রোববার দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিতে নগরীর বেশির ভাগ এলাকাই তলিয়েছে পানিতে। পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, চট্টগ্রামে সোমবার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। অতিবর্ষণের কারণে পাহাড়ধসের শঙ্কা রয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের স্টাফ অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুক বলেন, ‘নগরের ফরেস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট এলাকা, মতিঝর্ণা, বাটালি হিল, একে খান পাহাড়, টাংকির পাহাড়, আমিন জুট মিলস এলাকা, রউফাবাদ, খুলশী, পাহাড়তলী, ফয়স লেক এলাকার পাহাড়গুলো ঝুঁকিপূর্ণ।’
এ ছাড়া আকবর শাহ এলাকার ঝিল-১, ২, ৩ নম্বর এলাকা, জিয়ানগর, মধ্যমনগর, মুজিবনগর, শান্তিনগর এলাকা, কৈবল্যধাম বিশ্ব কলোনি এলাকা, ফিরোজ শাহ এলাকা, বায়েজিদ-ফৌজদারহাট সিডিএ লিংক রোড এলাকার পাহাড়গুলোতেও ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে মাইকিং করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আগ্রাবাদ, চান্দগাঁও, বাকলিয়া ও কাট্টলী সার্কেলে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। মাইকিংয়ের পর ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীরা না সরলে তাদের উচ্ছেদ করা হবে।
চান্দগাঁও সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মামনুন আহমেদ অনিক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার সার্কেলের মিয়ার পাহাড়ে কিছু বসবাসকারী রয়েছেন। তাদের সরে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। অনেকে সরেও গেছেন।
‘স্থানীয় মসজিদগুলো থেকেও মাইকিং করে লোকজনকে নিরাপদে আশ্রয় নিতে বলা হচ্ছে। প্রতি ওয়াক্ত নামাজের আগে-পরে মসজিদের মুয়াজ্জিনরা ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকা থেকে লোকজনকে সরে যেতে আহ্বান করছেন।’
এ ছাড়া বাকলিয়া সার্কেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, সদরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুমা জান্নাত, আগ্রাবাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোজাম্মেল হক চৌধুরী সকাল থেকে দুর্গতদের সহায়তা, মাইকিং এবং জনসচেতনতায় যুক্ত আছেন।
মামনুন আহমেদ অনিক বলেন, ‘মতিঝর্ণা এলাকায় লালখান বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শহীদনগর সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত আছে। মতিঝর্ণা এলাকায় এরই মধ্যে প্রায় ৪০টি পরিবারের ২০০ লোক সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
২০১৫ সালের ১৮ জুলাই বৃষ্টির সময় নগরের বায়েজিদ এলাকার আমিন কলোনিতে পাহাড়ধসে তিনজন নিহত হয়। একই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ থানার মাঝিরঘোনা এলাকায় পাহাড়ধসে মা-মেয়ে মারা যায়।
তবে চট্টগ্রামে পাহাড়ধসের সবচেয়ে বড় ঘটনা ঘটে ২০০৭ সালের ১১ জুন। মারা যায় ১২৭ জন। এরপর শক্তিশালী পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়।