সাভারের আশুলিয়ায় বাড়িওয়ালার শিশুকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় দুই মাস পর প্রধান আসামি আরিফুল ইসলামকে পাবনা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জেলার সুজানগর সদর থানার তারাবাড়ি গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে রোববার ভোরে আসামিকে গ্রেপ্তার করে আশুলিয়া থানা-পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আল আমিন নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এসআই জানান, গত ২৯ মার্চ শিশুটির মরদেহ উদ্ধারের পরই আরিফুলের স্ত্রী পরিচয়ে বাসাভাড়া নেয়া লিজা আক্তার নামে এক তরুণীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
তিনি আরও জানান, টাকার জন্যই পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটান বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন আরিফুল। তবে এ ঘটনার সঙ্গে অন্য কারও সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা জানার জন্য আসামিকে সাত দিনের রিমান্ডে পেতে আদালতে পাঠানো হবে।
নিহত শিশুর নাম রাজা মিয়া। ৯ বছরের এই শিশুটি আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ি এলাকার কালাম মাদবরের ছেলে।
শিশুর পরিবার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ২৮ মার্চ সন্ধ্যায় রাজা মিয়া নিখোঁজ হয়। রাতে কালামের মোবাইল ফোনে এক ব্যক্তি ফোন করে রাজাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানান। তার মুক্তির বিনিময়ে চাওয়া হয় ৫০ লাখ টাকা। বলা হয়, ওই ব্যক্তি রাজধানীর উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টর থেকে ফোন করেছেন।
এর পরপরই কালাম আশুলিয়া থানায় অভিযোগ নিয়ে যান। তখন এলাকার লোকজন তাকে ফোন করে জানান, তার বাড়িরই চারতলা থেকে একটি বস্তায় পাওয়া গেছে রাজার মরদেহ।
সেখানে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, রাজাকে সবশেষ বাড়ির সামনের একটি চায়ের দোকানে আরিফুলের সঙ্গে দেখা যায়। এর ভিত্তিতে আটক করা হয় আরিফুলের স্ত্রী লিজাকে।
এসআই আল আমিন জানান, আরিফুল ও লিজা ভবনের যেই ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন, সেখানেই বারান্দায় রাখা ছিল রাজার মরদেহ। তার হাত-পা বাঁধা ও মুখে কাপড় গোঁজা ছিল। ধারণা করা হয়, তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর বস্তায় ভরে ফেলে রাখা হয়। রাজা নিখোঁজের পর থেকে পলাতক ছিলেন আরিফুল।
- আরও পড়ুন: অপহরণের পর হত্যা, আটক ভাড়াটে
এ ঘটনায় ২৯ মার্চ আশুলিয়া থানায় আরিফুল ও লিজার নামে মামলা করেন রাজার বাবা কালাম।
এসআই বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধারের দিনই হত্যার অভিযোগে আরিফুলের কথিত স্ত্রী লিজাকে আটক করা হয়। এরপর হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে পালিয়ে যান তিনি। গত দুই মাস অবস্থান পরিবর্তন করছিলেন তিনি। কখনও নারায়ণগঞ্জ, কখনও গাজীপুর আবার মাওনা এলাকায় তার লোকেশন দেখাচ্ছিল। সবশেষ প্রযুক্তির সহায়তায় পাবনায় গ্রামের বাড়িতে আরিফুলের অবস্থান শনাক্ত করা হয়।’
নিহত শিশুর বাবার একাধিক স্ত্রী থাকায় হত্যাকাণ্ডে পরিবারের কেউ সংশ্লিষ্ট ছিল কি না সে বিষয়ে এসআই বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি না তা জানতে আসামিকে রিমান্ডে চাওয়া হবে। রোববার দুপুরেই তাকে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠানো হবে।’