শরীয়তপুর, নরসিংদী ও ভোলায় বজ্রপাতে পাঁচজন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার জয়সাগর ও ডাক্তার মফিজ রাড়িরকান্দি গ্রামে শনিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন উপজেলার মূলনা ইউনিয়নের জয়সাগর গ্রামের বাসিন্দা ৬২ বছর বয়সী তাজুল ইসলাম খলিফা এবং পালেরচর ইউনিয়নের ডাক্তার মফিজ রাড়িরকান্দি গ্রামের বাসিন্দা ৪২ বছর বয়সী মালেক পেদা। তারা দুজনই কৃষক ছিলেন।
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশ্রাফুজ্জামান ভূইয়া জানান, দুপুর ২টার দিকে বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়। ওই সময় কৃষক তাজুল ইসলাম ও মালেক পেদা জমিতে কাজ করছিলেন। বৃষ্টি ও বজ্রপাত দেখে তারা কাজ ফেলে বাড়িতে যাওয়ার পথে বজ্রপাতে মারা যান।
তাদের জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে চিকিৎসক হাবিবুর রহমান দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
নরসিংদীতে বজ্রপাতে নারীসহ দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
জেলার মনোহরদী এবং বেলাবোতে শনিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
৩৭ বছর বয়সী গুরু দেব সাহা মনোহরদী চালাকচর এলাকার বাসিন্দা এবং ৪০ বছর বয়সী আফিয়া বেগম বেলাবোর চরউজিলাব এলাকার কাসু মিয়ার স্ত্রী।
মনোহরদীর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান জানান, ভোর থেকে প্রচুর বৃষ্টি এবং বজ্রপাত হচ্ছিল। এর মধ্যে সকালে বাড়ির পাশের এক আম গাছের নিচে আম কুড়াতে যান গুরু দেব। এসময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে আম গাছ পুড়ে যায়। পরে গাছের পাশেই তার মরদেহ পাওয়া যায়।
বেলাব থানার উপপরিদর্শক মো. আলাউদ্দীন জানান, আফিয়া বেগম সকালে দিকে তার বাড়ির পাশের সবজি ক্ষেত থেকে বরবটি তুলে আনতে গিয়েছিলেন। অনেক সময় পার হয়ে গেলেও ফিরে না আসায় তার স্বামী তাকে খুঁজতে সবজি খেতে যান। সেখানে আফিয়া বেগমের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
ভোলার লালমোহনে বজ্রপাতে মাসুমা বেগম নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নুরে আলম নামের এক কৃষক।
উপজেলার লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম লর্ডহাডিঞ্জ গ্রামে শনিবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মাসুমা ওই গ্রামের বাসিন্দা সাহাবুদ্দিনের স্ত্রী ও এক সন্তানের জননী ছিলেন। আহত কৃষক নুরে আলম একই বাড়ির বাসিন্দা।
লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাসেম জানান, বিকেলের দিকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্যে মাসুমা বেগম বাড়ির উঠান থেকে হাঁস-মুরগী নিয়ে ঘরে ফিরছিলেন। একই সময় কৃষক নুরে আলম গরু নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই গৃহবধু মারা যান। আহত হন কৃষক। তিনি স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এদিকে, ভোলার মনপুরায় বাড়ির সামনে ফুটবল খেলতে গিয়ে বজ্রাঘাতে দুই স্কুল ছাত্র জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।
ভোলার মনপুরায় ফুটবল খেলতে গিয়ে বজ্রাঘাতে দুই স্কুল ছাত্র আহত হয়েছে। ছবি: নিউজবাংলা
উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চরফৈজুদ্দিন গ্রামে শনিবার বিকেল ৪টায় এ ঘটনা ঘটে।
বজ্রপাতে আহত দুই ছাত্র হলো গোমাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র আল-আমিন ও কলাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র ছেলে ফাহিম। তারা দুজন সর্ম্পকে চাচাতো ভাই।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক নাইম হাসনাত জানান, বজ্রপাতের আঘাতে আহত দুই জনকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে এদের মধ্যে আল-আমিনের অবস্থা গুরুতর।