নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার দেড় মাস পরও পাহাড় কাটার অপরাধে পরিবেশ অধিদপ্তরের করা পৌনে এক কোটি টাকা জরিমানার টাকা পরিশোধ করেনি চট্টগ্রামের জালালাবাদ তালীমুল কুরআন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
অধিদপ্তর এখন তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
গত ৩১ মার্চ মাদ্রাসা পরিচালকের ৭৮ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করে পরিবেশ অধিদপ্তর। তাদের ১৫ এপ্রিলের মধ্যে জরিমানা পরিশোধে সময় বেঁধে দেয়া হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক রুবিনা ফেরদৌস স্বাক্ষরিত একটি চিঠির মাধ্যমে এই জরিমানার কথা জানা যায়।
সেই চিঠি দেয়ার দুই মাস পর পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের উপপরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জরিমানার টাকা পরিশোধ করেনি জালালাবাদ তালীমুল কুরআন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এ জন্য পাহাড় কাটায় জড়িতদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।’
এ বিষয়ে জানতে জালালাবাদ তালীমুল কুরআন মাদ্রাসার পরিচালক হাফেজ মো. তৈয়বকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
আবু তৈয়বের বিরুদ্ধে জালালাবাদ আরেফিন নগরের চারটি স্থানে সর্বমোট ১ লাখ ৫৬ হাজার ১৫০ ঘনফুট পাহাড় কাটার প্রমাণ পায় পরিবেশ অধিদপ্তর।
হাফেজ মো. তৈয়বের কাছে পাঠানো রুবিনা ফেরদৌস স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘সরেজমিন পরিদর্শন করে আপনার বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া পাহাড় কাটার প্রমাণ পেয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের একটি টিম।
‘এর পরিপ্রেক্ষিতে আপনাকে শুনানির জন্য পরপর তিনবার নোটিশ প্রদান করা হলেও আপনি বা আপনার প্রতিনিধি শুনানিতে হাজির হননি। পরবর্তী সময়ে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আপনি জালালাবাদ আরেফিন নগরে চারটি স্থানে সর্বমোট ১ লাখ ৫৬ হাজার ১৫০ ঘনফুট পাহাড় কেটেছেন।
‘এই অপরাধে আপনাকে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০)-এর ধারা ৭ অনুযায়ী প্রতিবেশগত ক্ষতিসাধনের দায়ে এনভায়রনমেন্টাল ড্যামেজ অ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতিতে ৭৮ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হলো।’
পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক সে সময় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জরিমানা করা টাকা ১৫ এপ্রিলের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি যেসব পাহাড় কাটা হয়েছে, সেগুলো পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে অভিযুক্তকে তিন মাসের সময় দেয়া হয়েছে। অন্যথায় অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’
জালালাবাদ তালীমুল কুরআন মাদ্রাসায় হেফজখানা ও নুরানী বিভাগ রয়েছে। মাদ্রাসাটিতে প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে।