ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের রসুলপুর গ্রামের দুই বোন অভাব-অনটনের কারণে দুই বছর আগে চাকরি নেন গাজীপুরের শ্রীপুরের একটি কারখানায়।
চাকরির সুবাদে তারা ওই এলাকাতেই বসবাস শুরু করেন। এ সময় প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠায় ইউসুফ নামের এক যুবককে বিয়ে করেন বড় বোন। কিন্তু ইউসুফ যে নারী পাচারকারী চক্রের সদস্য সেটি বুঝতে পারেননি তিনি।
টিকটক তারকা বানানো ও বেশি বেতনে চাকরির লোভ দেখিয়ে স্ত্রী ও শ্যালিকাকে ভারতের নারী পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করে দেন স্বামী ইউসুফ ও তার সহযোগী সুজন। পরে পাচারকারীদের কাছ থেকে কৌশলে পালিয়ে কলকাতা পুলিশ ও বিএসএফের হাতে আটক হয়ে দুই বোন এখন আছেন সেফ হোমে।
পাচারকারী চক্রের হাত থেকে কৌশলে পালিয়ে ১৭ মে হাওড়া স্টেশন এলাকায় পুলিশের হাতে আটক হন ছোট বোন। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে কলকাতার শিয়ালদহ এলাকায় ভারতীয় সরকার পরিচালিত সেফ হোম পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশন নেটওয়ার্কের হাতে ন্যস্ত করে।
এর তিন দিন পর ২১ মে বড় বোন ভারতের বোঝাপড়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে আটক হন। বিএসএফ তাকে ভারতীয় পুলিশের হাতে তুলে দেয়। সংবাদটি ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
বর্তমানে দুই বোনই শিয়ালদহের একটি সেফ হোমে রয়েছেন।
দুই তরুণীর বাবা নিউজবাংলাকে জানান, মে মাসের প্রথম সপ্তাহে নিখোঁজ হন তার দুই মেয়ে। নারী পাচারকারী ইউসুফ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের বাসিন্দা বলে নিজেকে পরিচয় দিয়েছিল। ইউসুফের সহযোগী ছিলেন সুজন মিয়া। তার নাম ঠিকানাও তিনি জানেন না।
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় শ্রীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ কোনো অভিযোগ বা মামলা নেয়নি। এতে আরও বেশি হতাশ হয়েছি। দুই মেয়েকে দ্রুত বাংলাদেশে ফেরত চাই।’
অভিযোগ না নেয়ার বিষয়ে জানতে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ইমাম হোসেনের ব্যবহৃত সরকারি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে দুই তরুণী নিখোঁজের ঘটনাটি খোঁজখবর নিয়ে বিধি মোতাবেক তাদের উদ্ধার করে দেশে আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম শফিউল্লাহ।