লালমনিরহাটে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে খোতেজা বেওয়া নামে এক বৃদ্ধাকে পা দিয়ে পিষে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
৬২ বছর বয়সী খোতেজা বেওয়া সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের মধ্য হিরামানিক গ্রামের প্রয়াত সোলায়মান আলীর স্ত্রী।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেলে খোতেজা বেওয়ার স্বামীর বড় ভাই (ভাসুর) শামসুল হক ও তার ছেলে-মেয়ে এবং ছেলের বউ মিলে পা দিয়ে পিষে তাকে হত্যা করেন। এ সময় খোতেজা বেওয়ার দুই ছেলে আব্দুল খালেক ও আব্দুল মালেক মারাত্মক আহত হন। এ ঘটনায় শামসুল হকের ছেলের বউ কোহিনুর বেগমকে আটকে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শামসুল হক ও সোলায়মান আলী আপন ভাই। সোলায়মান আলী কয়েক বছর আগে মারা যান। এই দুই পরিবারের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ দীর্ঘ দিনের। শুক্রবার বিকেলে বাড়ির পেছনে নিজেদের জমিতে মালেকের স্ত্রী খালেদা আক্তার মুক্তা একটি আম গাছ লাগাতে গেলে বাধা দেন শামসুল হক।
পরে খোতেজা বেওয়া তাদের বলেন, ‘আমাদের জমিতে আমরা গাছ লাগাব, তোমরা বাধা দেয়ার কে?’
এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে খোতেজা বেওয়াকে টেনে-হিঁচড়ে শামসুল হক তাকে তাদের উঠানে নিয়ে যান। এরপর শামসুল হক এবং তার ছেলে-মেয়ে ও ছেলের বউ সবাই মিলে পা দিয়ে তাকে পিষতে থাকেন।
এ সময় মাকে বাঁচাতে দুই ছেলে আব্দুল খালেক ও আব্দুল মালেক এগিয়ে গেলে তাদেরও বেধড়ক মারপিট করা হয়। খোতেজার মৃত্যু নিশ্চিত হলে তারা সবাই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।
ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজন ও খোতেজার আত্মীয়-স্বজন কোহিনুর নামে একজনকে আটক করে রাখে। পরে পুলিশ এলে তারা তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন।
খবর পেয়েই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ-সার্কেল) মারুফা জামান ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ওসি শাহা আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ-সার্কেল) মারুফা জামান বলেন, ‘খবর পেয়েই পুলিশ প্রশাসন ঘটনাস্থলে এসেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য নেয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে শামসুল হকের ছেলের বউ কোহিনুরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।