এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে হাতে তৈরি বিড়ির ওপর কর বাড়েনি, কর বেড়েছে সিগারেটের ওপর। তবুও চাকরি হারানোর শঙ্কায় আছেন রংপুরের হারাগাছের শত শত বিড়ি শ্রমিক।
তারা বলছেন, প্রতি বছরই বাজেট ঘোষণার পর মালিকরা শ্রমিক ছাঁটাই করে। এবারও সেই একই অবস্থা হতে পারে।
বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরি সভাপতি ও হারাগাছ বিড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আমিন বিএসপি বলেন, ‘বিড়িতে অতিরিক্ত ট্যাক্স ধরার কারণে গত দুই বছর ধরে আমরা শ্রমিকদের কোনো মজুরি বাড়াতে পারছি না।’
তিনি বলেন, ‘এক সময় আমরা সপ্তাহে ৬ দিনই কাজ করেছি। এখন মাত্র একদিন কাজ করি। বিদেশি কোম্পানিদের চক্রান্তের কারণে দেশীয় বিড়ির ওপর কর বাড়াচ্ছে সরকার। আর মালিকরা লোকসানের ভয়ে আমাদের ছাঁটাই করছে।’
হারাগাছে তিন লাখের বেশি শ্রমিক ছিল। এখন এক লাখেরও কম হবে। চাকরি হরিয়ে অন্য পেশা খুঁজছেন অনেকে। বিড়ির উৎপাদনও কমে গেছে।
শ্রমিক নেতা আমিন বিএসসি বলেন, ‘বিড়ির ওপর যে কর ছিল তা গত ৭/৮ বছরে অতিরিক্ত করার ফলে প্রকৃত মালিকরা পুঁজি হারিয়েছেন। আর চোরাই পথে কিছু ব্যক্তি নকল ব্যান্ডরোল বসিয়ে বিড়ি বানিয়ে বিক্রি করায় মূল ব্যবসায়ীরা এই পথে থেকে সরে এসেছেন। আমরা কর্মহীন হয়ে পড়েছি।’
তিনি বলেন, ‘এক সময় সারা দেশে ৩৫ লাখের ওপর বিড়ি শ্রমিক ছিল। এখন ১৫ লাখেরও নিচে নেমে এসেছে। এই শ্রমিকদের ওপর আঘাত আসে প্রতি বছর।
‘বিদেশি কোম্পানির যেসব সিগারেট রয়েছে সেগুলোর দাম বাড়ানো উচিৎ। সেই সঙ্গে দেশীয় তামাক দিয়ে উৎপাদিত বিড়িতে কর আরোপ করা যাবে না। সরকার যখনই বিড়িতে কর বসায় তখনই শ্রমিক ছাঁটাই শুরু হয়।’
রংপুর জেলা বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি মজিবর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, বিড়ির ওপর এবার কর বাড়েনি। তাই আগের নিয়মই সব চলবে।
এবারের বাজেটে হাতে তৈরি ফিল্টার বিযুক্ত বিড়ির ২৫ শলাকার দাম ১৮ টাকা, ১২ শলাকার দাম ৯ টাকা ও ৮ শলাকার দাম ৬ টাকা এবং ফিল্টার সংযুক্ত বিড়ির ২০ শলাকার দাম ১৯ টাকা ও ১০ শলাকার দাম ১০ টাকা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।