করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে শনিবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য সাতক্ষীরায় লকডাউন দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘করোনা প্রতিরোধ’ বিষয়ক এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
তিনি জানান, সংক্রমণের হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি।কয়েক দিনের গড় হিসাবে সাতক্ষীরায় করোনা শনাক্তের হার ৫৩ শতাংশ।
করোনা আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে এবং প্রাতিষ্ঠানিক ও পারিবারিক কোয়ারেন্টিনে চিকিৎসা নিচ্ছেন ২৪৫ জন। এর মধ্যে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩২ জন, সদর হাসপাতালে ২০ জন ও হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ১৯৩ জন।
জেলা প্রশাসক জানান, লকডাউনের এক সপ্তাহে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনাকাটার জন্য সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বাজার খোলা থাকবে।
লকডাউনের আওতার বাইরে থাকবে ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, অ্যাম্বুলেন্স, সংবাদপত্র এবং বিদ্যুৎসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।
তিনি আরও জানান, দূরপাল্লা ও আন্তজেলা বাস, ট্রাক, ইজিবাইক, সিএনজিচালিত যানবাহন এবং মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকবে।
লকডাউনে সাতক্ষীরার সঙ্গে যশোর ও খুলনার সড়ক যোগাযোগে পয়েন্টগুলোতে পুলিশ চেকপোস্ট থাকবে। এ সময় সীমান্তে পারাপার বন্ধ থাকবে। ভোমরা বন্দরে আমদানি-রপ্তানি চললেও দোকানপাট বন্ধ থাকবে। শহরে থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে শতভাগ মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়েত জানান, স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করলে ও আইন অমান্য করলে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে।
করোনা মহামারির মধ্যেই ২১ জুন সাতক্ষীরার তালা ও কলারোয়া উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভোট স্থগিত রাখতে নির্বাচন কমিশনারকে অনুরোধের বিষয়েও আলোচনা হয় ওই বৈঠকে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, বিজিবি সাতক্ষীরার ৩৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নে ল আল মাহমুদ, সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন সাফায়েত, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তানজিল্লুর রহমান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু।
এ ছাড়া সভায় ভার্চুয়ালি সম্পৃক্ত হন সাতক্ষীরা-৩ আসনের সাংসদ ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক, তালা-কলারোয়ার সাংসদ অ্যাড. মুস্তাফা লুৎফুল্লাহসহ বিভিন্ন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তারা, উপজেলা চেয়ারম্যান ও সীমান্তবর্তী এলাকার কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান।