নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় সাত দিনের বিশেষ লকডাউনের প্রথম দিনে প্রশাসনকে বেশ কঠোর অবস্থানে দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। বাস বন্ধ থাকলেও মানুষকে হেঁটে চলাচল করতে দেখা গেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ কোনো যানবাহন বের করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত করছে জরিমানা।
ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা থাকলেও বন্ধ রয়েছে অন্য সব দোকান।
নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) কে এম এ মামুন খান চিশতী নিউজবাংলাকে জানান, লকডাউন ঘোষণার পর থেকে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রশাসন মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যারা বের হচ্ছেন, তাদের বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। কাউকে কাউকে জরিমানাও করা হয়েছে। সবকিছু নজরদারির মধ্যে রাখা হচ্ছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় সাত দিনের বিশেষ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক হারুন অর রশীদ বুধবার জানান, গত ৩০ মে জেলায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক স্মারকে নির্দেশনা দেয়া হয়। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী ১ জুন জেলার করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে এক সভা হয়। সভার সিদ্ধান্তক্রমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ১৫ দফা নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। আগামী ৯ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত এ লকডাউন চলবে।
তিনি আরও জানান, জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার পাশেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় সেখানে করোনা সংক্রমণের হার বেড়েছে। এ কারণে নিয়ামতপুর উপজেলাতেও সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া জেলা শহরের সঙ্গে বাকি ১০টি উপজেলার যোগাযোগ থাকায় নওগাঁ পৌরসভাতেও সংক্রমণ বেড়েছে। এ কারণে জেলা শহরসহ অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।
নওগাঁয় সংক্রমণের চিত্র
জেলা সিভিল সার্জন অফিস জানিয়েছে, নওগাঁ জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তের হার প্রায় ১৪ দশমিক ৭০ শতাংশ।
আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলার দুজন, মহাদেবপুরের পাঁচজন, মান্দার একজন, পত্নীতলার তিনজন, ধামইরহাটের চারজন, নিয়ামতপুরের পাঁচজন, সাপাহারের দুজন ও পোরশার একজন আছে।
এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ২ হাজার ৩৩৯ জন। মৃত্যু হয়েছে ৪৩ জনের। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৩৫ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ১০৪ জনকে। মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ১ হাজার ২৪ জন।
বর্তমানে আইসোলেশনে আছে ১৭ জন ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১১ জন।