নির্জন সড়কে গাড়িচাপায় একজনের মৃত্যু। গাড়িটিকে আটকানো যায়নি। তবে প্রত্যক্ষদর্শী রিকশাচালকের তাৎক্ষণিক বুদ্ধিতে প্রায় দুই সপ্তাহ পর ধরা পড়লেন চালক ও সহকারী।
গাজীপুরে মহাসড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহ উদ্ধারের ১৩ দিন পর এ ঘটনার রহস্য উন্মোচনের কথা জানিয়েছে গাজীপুর মহানগর পুলিশ-জিএমপি।
এ ঘটনায় পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছেন মুন্না নামে একজন রিকশাচালক।
এরপর মঙ্গলবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি টোলপ্লাজা এলাকা থেকে এবং রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে একটি কাভার্ড ভ্যানসহ চালক ও তার সহকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
জিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ-দক্ষিণ) মোহাম্মদ ইলতুৎ মিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এই মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশের হেফাজতে আছেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বল্লাচৌ গ্রামের রাশেদ মিয়া এবং লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার হাঁপানিয়া এলাকার জাবেদ হোসেন। এদের মধ্যে রাশেদ কাভার্ড ভ্যানচালক আর জাবেদ তার সহকারী।
পুলিশ কর্মকর্তা ইলতুৎ মিশ জানান, ১৯ মে ভোররাত ৩টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাছা থানার বড়বাড়ি এলাকার পাকসিন ফ্যাক্টরির সামনে থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দুর্বৃত্তরা একটি কাভার্ড ভ্যান থেকে লাশটি সেখানে ফেলে পালিয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
এ ঘটনায় গাছা থানায় মামলা করে পুলিশ। পরে নিহতের আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে তার নাম গাজী ফারুক হোসেন বাবু বলে নিশ্চিত হয় পুলিশ। তিনি ঢাকার দক্ষিণখান থানার ফারদাবাদ এলাকার মৃত আব্দুল কাদিরের ছেলে।
তিন দিন পর তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারছিল না পুলিশ।
ইলতুৎ মিশ বলেন, ‘তদন্তকালে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক রিকশাচালকের সন্ধান পায় পুলিশ। তার দেয়া তথ্য ও গাড়ির নম্বরের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি টোলপ্লাজা এলাকা থেকে চালক রাশেদ ও হেলপার জাবেদকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের দেশ ট্রাভেল এজেন্সির সামনে থেকে একটি কাভার্ড ভ্যানসহ আটক করা হয়।
তিনি জানান, আটক দুজনকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তারা বলেন, গাজী ফারুক তাদের গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে নিহত হন। এবং তারা ঘটনার বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
ইলতুৎ মিশ জানান, ঘটনার রাতে কাভার্ড ভ্যানটি নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে ওই ব্যক্তি হঠাৎ পেছনের চাকার নিচে চাপা পড়েন। ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন।
পরে মরদেহ গাড়ির নিচ থেকে বের করে সড়কের এক পাশে রেখে গাড়ি নিয়ে চালক ও হেলপার ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।