চট্টগ্রাম বন্দরে অত্যাধুনিক চারটি স্ক্যানার বসাতে কার্যক্রম শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে স্বচ্ছতা বাড়ানো ও মিথ্যা ঘোষণায় আনা পণ্য খালাস রোধে এসব স্ক্যানার বসানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে এনবিআর।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তির স্ক্যানারগুলো এক্স-রে বা গামা রশ্মি ইমেজিং প্রক্রিয়ায় কনটেইনার খোলা ছাড়াই এর ভেতরের রঙিন ছবি তুলতে পারবে। এসব স্ক্যানার স্ক্যান করা ছাড়াও কনটেইনারের ওজন পরিমাপ করতে পারবে। এতে রেডিও পোর্টাল মনিটর এবং ইমেজিং সিস্টেম রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিবহন বিভাগের একজন কর্মকর্তা বুধবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এনবিআর স্ক্যানার বসানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সংস্থাটির লোকজন সরেজমিনে গেটগুলো পরিদর্শন করে গেছেন। স্ক্যানারগুলো এনবিআর আমদানি করেছে। ঢাকায় রয়েছে এসব স্ক্যানার। সব ঠিক থাকলে চলতি বছর নতুন চারটি স্ক্যানার আমরা পাব।’
এনবিআর থেকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে দেয়া এক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকার ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটের অর্থ আইন-২০১৯-এ পণ্যের কনটেইনার বাধ্যতামূলক বৈদ্যুতিক স্ক্যানিংয়ের আওতায় আনার বিধান চালু করেছে।
বিধান অনুযায়ী, সরকারি আদেশে অব্যাহতি ব্যতিরেকে কোনও চালানকে বৈদ্যুতিক স্ক্যান ছাড়া কোনও শুল্ক বন্দর বা শুল্ক স্টেশন থেকে ছাড়ানো যাবে না। বৈদ্যুতিক স্ক্যানিং সিস্টেমের অভাবে শারীরিক পরীক্ষা করে চালান খালাসের বিধানও রাখা হয়েছে। অপ্রতুল স্ক্যানার মেশিনের কারণে এখনও সারা দেশের কাস্টম হাউসগুলো আমদানি করা চালানের ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কায়িকভাবে পরীক্ষা করে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন আধুনিক কনটেইনার স্ক্যানারগুলোতে জৈব, অজৈব, ধাতব, প্লাস্টিক, বিভিন্ন পণ্যের রঙিন ছবি পাওয়া যাবে। এ ছাড়া নতুন স্ক্যানারগুলো শুল্ক ফাঁকি, চোরাচালান, মিথ্যা ঘোষণা রোধ, ঝুঁকিমুক্ত আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ও জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস কমিশনার ফখরুল আলম জানান, জালিয়াতি রোধে স্ক্যানার বসানোর বিকল্প নেই। কিন্তু চাহিদার তুলনায় চট্টগ্রাম বন্দরে স্ক্যানার মেশিনের সংখ্যা কম। নতুন মেশিন বসালে জালিয়াতি কমবে। পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।
বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের ১২টি গেটে স্ক্যানার আছে ৭টি। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের জেনারেল কার্গো বার্থ (জিসিবি) ১ নম্বর গেট এবং নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ৩ নম্বর গেটে আছে এফএস ৬০০০ সিরিজের অত্যাধুনিক ফিক্সড কনটেইনার স্ক্যানার। চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনাল (সিসিটি) ২, ৪ ও ৫ নম্বর গেটে আছে একটি করে এফএস ৩০০০ মডেলের ফিক্সড কনটেইনার স্ক্যানার। এ ছাড়া সিসিটি-২ ও জিসিবি-২ নম্বর গেটে রয়েছে একটি করে মোবাইল স্ক্যানার।