বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুরে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন

  •    
  • ২ জুন, ২০২১ ১৭:১৭

জেলা প্রশাসক হারুন অর রশীদ জানান, জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার পাশেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় সেখানে করোনা সংক্রমণের হার বেড়েছে। এ কারণে নিয়ামতপুর উপজেলাতেও সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া জেলা শহরের সঙ্গে বাকি ১০টি উপজেলার যোগাযোগ থাকায় নওগাঁ পৌরসভাতেও সংক্রমণ বেড়েছে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় সাতদিনের বিশেষ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক হারুন অর রশীদ সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন। ৩ জুন এ বিশেষ লকডাউন কার্যকর হবে। চলবে আগামী ৯ জুন পর্যন্ত।

জেলা প্রশাসক হারুন অর রশীদ জানান, গত ৩০ মে জেলায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এক স্মারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেই নির্দেশনা মোতাবেক গত ১ জুন জেলার করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্তক্রমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধকল্পে ১৫ দফা নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।

তিনি জানান, জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার পাশেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় সেখানে করোনা সংক্রমণের হার বেড়েছে। এ কারণে নিয়ামতপুর উপজেলাতেও সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া জেলা শহরের সঙ্গে বাকি ১০টি উপজেলার যোগাযোগ থাকায় নওগাঁ পৌরসভাতেও সংক্রমণ বেড়েছে। এ কারণে জেলা শহরসহ অভ্যন্তরীন ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।

১৫ দফা নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে: নওগাঁ পৌরসভা এবং নিয়ামতপুর উপজেলার সব ধরনের গণপরিবহনের (বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, সিএনজি, অটোরিকশা, টমটম, রিকশা, মোটরসাইকেল ইত্যাদি) চলাচল বন্ধ থাকবে।

পৌরসভা এবং নিয়ামতপুরের কাঁচাবাজার ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সকাল সাতটা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনা-বেচা করা যাবে। তবে প্রয়োজন ছাড়া কেউ এসব স্থানে যেতে পারবেন না।

শপিংমলসহ অন্যান্য দোকানপাট, গরু-ছাগলের হাট সমূহ; খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকবে। তবে ওষুধের দোকান খোলা রাখা যাবে।

সরকারি অফিস ও ব্যাংকসমূহ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের অন্যান্য নির্দেশনার আলোকে শুধু জরুরি কাজে সীমিত লোকবল নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনা করতে হবে। তবে সব এনজিওর কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ওষুধ কেনা, চিকিৎসাসেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। জরুরি প্রয়োজনে চলাচলকারী সকলকে বাধ্যতামুলকভাবে মাস্ক পরতে হবে।

সাপাহার এবং পোরশা উপজেলাধীন সকল হাট-বাজার ও স্থায়ী দোকান; মান্দা উপজেলার চৌবাড়িয়া হাটসহ নওগাঁ জেলার সঙ্গে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও আন্তর্জাতিক সীমান্ত সংলগ্ন সব হাট-বাজার বন্ধ থাকবে। তবে, কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সকাল সাতটা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনা-বেচা করা যাবে।

আমের আড়ত/বাজার পৃথক জায়গায় ছড়িয়ে কেনা-বেচা করা যাবে। বাগান থেকে আম ট্রাকে করে পাঠানো যাবে। এ ছাড়া কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আম পরিবহন চালু থাকবে।

নওগাঁ জেলা থেকে আন্তঃজেলা এবং জেলা সদর থেকে উপজেলা পর্যায়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে রোগী পরিবহনকারী অ্যাম্বুলেন্স, জরুরি পণ্য পরিবহন এবং জরুরি পরিষেবা ও জরুরি সরকারি গাড়ির ক্ষেত্রে এ বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হবেনা।

নওগাঁ জেলার কোনো বাড়িতে কোভিড আক্রান্ত রোগী থাকলে সে বাড়ি পুরোপুরি লকডাউন করতে হবে এবং ওই বাড়ির সদস্যরা লকডাউনে থাকবেন। সেক্ষেত্রে এ ধরনের বাড়ি লাল পতাকা দ্বারা চিহ্নিত করতে হবে। একই গ্রাম/মহল্লায় একাধিক বাড়িতে সংক্রমণ চিহ্নিত হলে ওই গ্রাম/মহল্লা লকডাউন করা হবে।

শিল্প-কারখানাসমূহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে। তবে, শ্রমিকদের স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনা-নেয়া নিশ্চিত করতে হবে।

মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জুম্মার নামাজসহ প্রতি ওয়াক্ত নামাজে সর্বোচ্চ ২০জন মুসল্লি অংশগ্রহণ করতে পারবেন। অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে সমসংখ্যক ব্যক্তি উপাসনা করতে পারবেন।

এসব নির্দেশনা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া, সিভিল সার্জন ডা. এবিএম আবু হানিফসহ জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন অফিসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৩০১ জন। করোনায় মোট মৃ্ত্যু হয়েছে ৪৩ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় হোম কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ১১৮ ব্যক্তিকে। এ পর্যন্ত মোট কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ২২ হাজার ২৪৯ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৯৬২ ব্যক্তি। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১১ জন এবং আইসোলেশনে আছেন ৯ জন।

এ বিভাগের আরো খবর