চট্টগ্রামে আলোচিত মাহমুদ খানম মিতু হত্যার মামলায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন মিতু হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছার স্ত্রীর পান্না আকতার।
সোমবার বিকেল ৪টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম হোসাইন মোহাম্মদ রেজার আদালতে তিনি এ জবানবন্দি দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় কর্মরত পাঁচলাইশ থানার জিআরও এসআই শাহীন ভূঁইয়া।
এসময় জবানবন্দিতে মিতু হত্যায় বাবুল আকতারের সম্পৃক্ততার বিষয়ে পান্না আকতার কিছু বলেছেন কি না এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা।
তবে তিনি বলেন, ‘পান্না আকতার মিডিয়াতে বলে আসছেন মিতু হত্যায় বাবুল আকতার সম্পৃক্ত। তার স্বামী মুছাকে দিয়ে মিতুকে হত্যা করিয়েছে বাবুল আকতার। তিনি এতদিন মিডিয়াতে যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটিই জবানবন্দিতে বলেছেন। আমি এখনও জবানবন্দির কপি পাইনি। সেটি পেলে বিস্তারিত জানাতে পারব।’
২৫ মে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় সাক্ষী হিসেবে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম শফিউদ্দিনের আদালতে মোখলেসুর রহমান ইরাদ নামে এক ব্যক্তিও জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানান এই পিবিআই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘এই মামলায় তৃতীয় সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিলেন ইরাদ।’
মুছার স্ত্রীর পান্না আকতারসহ মিতু হত্যা মামলায় এই পর্যন্ত চারজন সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিলেন।
২০১৬ সালের ৫ জুন ভোরে ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিতে বের হওয়ার পর চট্টগ্রাম শহরের জিইসি মোড়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয় মিতুকে।
ঘটনার পর অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন তৎকালীন এসপি বাবুল আকতার।
মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, তার জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্যই স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।
তবে বাবুলের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন ও শাশুড়ি সাহেদা মোশাররফ এই হত্যার জন্য বাবুল আকতারকে দায়ী করে আসছিলেন।
শুরু থেকে মামলাটির তদন্ত করছিল চট্টগ্রাম পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালত মামলাটির তদন্তের ভার পিবিআইকে দেয়।
১১ মে বাবুল আকতারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তদন্তে বাবুল আকতারের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলার লক্ষ্যে ১২ মে ওই মামলার ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় সংস্থাটি।
একইদিন দুপুরে বাবুল আকতারসহ আটজনকে আসামি করে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।
মামলার বাকি সাত আসামি হলেন মো. কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছা, এহতেশামুল হক প্রকাশ হানিফুল হক প্রকাশ ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু, মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার সাক্কু এবং শাহজাহান মিয়া।