বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পুকুর যেন মিনি পার্ক

  •    
  • ৩১ মে, ২০২১ ০৯:০৪

আফরোজা খাতুন নামে এক দর্শনার্থী বলেন, ‘পারিবারিক কাজে এসেছিলাম কুন্দনা গ্রামে। এসে দেখি এত সুন্দর একটি পরিবেশ। ভিতরে না ঢুকে থাকতে পারলাম না।’

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার কুন্দনা গ্রামের পাঁচ ভাই পৈতৃক সম্পত্তি হিসেবে এক জায়গায় পেয়েছিলেন ১০ বিঘা জমি। মাছ চাষের জন্য সেই জমিতে ২০১৫ সালে তিনটি পুকুর খনন করেন তারা।

বছরের শেষ দিকে বড় ভাই আনোয়ারুল ইসলামের মনে হয় পুকুর পাড়ে রোপণ করবেন বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ও গাছ। এরপরই অন্য চার ভাইকে নিয়ে শুরু করেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দেশি-বিদেশি গাছের চারা সংগ্রহ।

পুকুরের পাশাপাশি ৪০ থেকে ৫০ ধরনের ফুল ও নানান প্রজাতির গাছের সমন্বয়ে স্থানটি এখন হয়ে উঠেছে মিনি পার্ক। প্রত্যন্ত গ্রামে এমন মনোরম পরিবেশ দেখতে তাই প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে আসে নানা বয়সী মানুষ।

‘শৌখিন পুকুর’ নামে পরিচিতি স্থানটির কারিগর কুন্দনা গ্রামের প্রয়াত তাজেম আলীর পাঁচ ছেলে আনোয়ারুল ইসলাম, ইউনুস আলী, আতোয়ার রহমান, আলতাফ হোসেন ও ইউসুফ আলী।

এ নিয়ে মেজো ভাই আলতাফ হোসেন বলেন, ‘মূলত শখ থেকেই আমরা নানান জাতের গাছ লাগিয়ে জায়গাটি পার্কের মতো গড়ে তুলেছি। এখানে প্রবেশ করতে কারও কাছ থেকে কোনো টাকা নিই না। সকলের জন্যই স্থানটি উন্মুক্ত।’

তিনি জানান, এখন কসমস, চন্দ্রমল্লিকা, জেনিয়া, দোলনচাঁপা, দ্যানটাসসহ প্রায় অর্ধশত দেশি-বিদেশি ফুল গাছ রয়েছে।

ঈদ, পয়লা বৈশাখ, পূজাসহ জাতীয় দিবসে অনেক মানুষ আসে জানিয়ে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে বড় পরিসরে পার্কের মতো করে জায়গাটি গড়ে তোলার পরিকল্পনা আছে।

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার কলেজশিক্ষার্থী আফরোজা খাতুন বলেন, ‘পারিবারিক কাজে এসেছিলাম কুন্দনা গ্রামে। এসে দেখি এত সুন্দর একটি পরিবেশ। ভিতরে না ঢুকে থাকতে পারলাম না।

‘পুরো স্থানটি ঘুরে দেখে খুবই ভালো লেগেছে। মনে হলো যেন কোনো পার্কে প্রবেশ করলাম। গ্রামে এত সুন্দর নানান প্রজাতির ফুল গাছ দিয়ে সাজানো, সত্যিই চমৎকার। ভবিষ্যতে সময় পেলে আবার আসব।’

স্থানীয় রাইগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আহম্মেদ আল হাবিব বলেন, ‘পড়াশোনার ফাঁকে অবসর সময়ে বন্ধুরা মিলে এখানে ঘুরতে আসি। এখানকার মালিক আঙ্কেলরা খুবই ভালো। তারাই বলে সময় করে ঘুরে যেও প্রতিদিন, কোনো সমস্যা নাই।’

মাসুদ রানা নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ‘আমাদের সন্তানদের ইচ্ছে হলেও সব সময় শহরের পার্কে ঘুরতে নিয়ে যেতে পারি না। তাই সন্তানদের এখানে এনে ঘুরিয়ে নিয়ে যাই। অনেক সময় আমরাও এসে অবসর সময় কাটাই।

‘এই স্থানটিকে এলাকার সবাই শৌখিন পুকুর নামেই চেনে। অনেক মানুষ আসে প্রতিদিন দেখতে।’

রাইগাঁ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনজুর আলম বলেন, ‘আমার জানামতে, নওগাঁ জেলায় এমন মনোরম পরিবেশ গ্রামপর্যায়ে কোথাও নেই। আমি কাজের ফাঁকে সময় পেলেই সেখানে যাই প্রকৃতির মাঝে মনকে একটু প্রশান্তি দিতে। পাঁচ ভাইয়ের এমন উদ্যোগ হতে পারে অনেকের জন্য অনুকরণীয়।’

এ বিভাগের আরো খবর