মেহেরপুরের ট্রাকচালক মো. শাহীন। পদ্মা পাড়ি দিতে এবার তিনি সম্মুখীন হয়েছেন এক নতুন অভিজ্ঞতার, যা একই সঙ্গে ভোগান্তির ও ক্লান্তিকর।
ফেরিতে যে পথ পাড়ি দেয়ার কথা ছিল ২০ মিনিটে, সেই পথ পাড়ি দিতে কেটে গেছে দুই দিন।
শাহীন নিউজবাংলাকে জানান, ঢাকা যাওয়ার জন্য তিনি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ মোড়ে এসে পৌঁছান শুক্রবার দুপুর নাগাদ। এরপর তীব্র যানজটের কারণে ফেরিতে ওঠেন রোববার দুপুরের দিকে। অবশেষে পৌঁছান দৌলতদিয়া ঘাটে।
তিনি বলেন, ‘এখানে এইভাবে আটকে থাকতে যে কী কষ্ট হইছে, তা বলে বোঝানো যাবে না। না ছিল খাবার হোটেল, না ঘুমানোর জায়গা, না একটা গোসলখানা বা টয়লেট। এই পরিবেশে কি একটা মানুষ থাকতে পারে? যেখানে পদ্মা পাড়ি দিতে লাগে ২০ মিনিট, সেখানে আমার লাগছে দুই দিন।’
এখানেই দুর্ভোগের শেষ হয়নি শাহীনের। তিনি বলেন, ‘এখানে আটকা পইড়া এখন আমার পকেটে কোনো টাকা নাই। যা ছিল সব শেষ। বাড়ি থাইকা বিকাশে টাকা আইনা চালাইতেছি। আমাদের কষ্ট দেখার তো কেউ নাই।’
যানবাহনের বাড়তি চাপে ও দৌলতদিয়া ঘাটের ৫ নম্বর ফেরিঘাট পদ্মার পানি বেড়ে ডুবে যাওয়ায় ঘাট এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজটের।
রোববার ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছিল যানবাহনের লাইন। যাত্রীবাহী যানবাহনগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে ফেরি পারের সুযোগ দেয়া হচ্ছে।
এদিকে ঘাট থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের চার কিলোমিটারজুড়ে অপেক্ষায় রয়েছে পণ্যবাহী ছয় শতাধিক ট্রাক। ফেরিতে উঠতে এগুলোর অপেক্ষা করতে হচ্ছে দুই থেকে তিন দিন।
সাতটি ঘাটের মধ্যে শুধু ফেরি চলছে ৩, ৪ ও ৭ নম্বর দিয়ে। বাকি চারটিই এখন অকেজো।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের দৌলতদিয়া ঘাট শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক খোরশেদ আলম নিউজবাংলাকে জানান, ৫ নম্বর ঘাট মেরামতের কাজ চলছে। যানবাহনের বাড়তি চাপ থাকায় ফেরিতে ওঠার জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তবে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে যানবাহনগুলো দ্রুত ছাড়ার।