সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় সাতবার ভূমিকম্প হওয়ার পর নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে অভিযান চালাচ্ছে সিটি করপোরেশন। এরই মধ্যে নগরীতে ২৫টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন ভবনও রয়েছে।
নগরীতে ২০১৯ সালের জরিপে ২৩টি ভবন আগেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত ছিল। এর বাইরে শনিবার ভূমিকম্পে হেলে পড়া আরও দুটি ভবনকে নতুন করে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ছাড়া সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় সিলেট সুপার মার্কেট ও মধুবন মার্কেট ১০ দিনের জন্য বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর মধ্যে আছে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের উত্তর পাশের কালেক্টরেট ভবন-৩, জেলা রোডের সমবায় ব্যাংক ভবন, একই এলাকার মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার সাবেক কার্যালয় ভবন, সুরমা মার্কেট, জিন্দাবাজারের মিতালী ম্যানশন, দরগাগেটের হোটেল আজমীর, টিলাগড় কালাশীলের মান্নান ভিউ ও পুরানলেনের ৪/এ কিবরিয়া লজ।
এর মধ্যে কিবরিয়া লজটি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিয়ে মেরামত করা হয়েছে।
একের পর এক ভূমিকম্পে শনিবার দিনভর আতঙ্কে ছিলেন সিলেট নগরীর বাসিন্দারা। রাতেও সে আতঙ্ক কাটেনি। সবশেষ রোববার ভোরে কম্পন অনুভূত হয় সিলেটে। রিখটার স্কেলে ভোরের ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ২ দশমিক ৮। সময় ছিল ভোর ৪টা ৩৫।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক নিউজবাংলাকে বলেন, পাহাড়ি অঞ্চল ও ভূমিকম্পের জন্য হাই রিস্ক জোন সিলেট।
এর আগে শনিবার সকাল থেকে বারবার কেঁপে ওঠে সিলেট। তবে ঠিক কতবার ভূমিকম্প হয়েছে, তা নিয়ে দেখা দেয় বিভ্রান্তি। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানানো হয় তারা চারটির মাত্রা পেয়েছে।
ওমর ফারুক বলেন, বাংলাদেশের ইস্টার্ন পার্টকে (পূর্বাঞ্চল) ভূমিকম্পপ্রবণ হিসেবে ধরা হয়। সে ক্ষেত্রে সিলেট সেই অংশের মধ্যে রয়েছে। সাধারণত বড় কোনো ভূমিকম্পের পর ছোট ছোট কিছু ভূমিকম্প হতে পারে। এটাও তা-ই। মাত্রা বেশি ছিল না।
ভূমিকম্প নিয়ে তিনি বলেন, ‘ভালো বা খারাপ সেটি আসলে ওইভাবে বলা যাবে না। ভূমিকম্প নিয়ে আমাদের তো আগে থেকে পূর্বাভাস দেয়ার কোনো সিস্টেম নেই। এটা বলা কঠিন।’
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে, সিলেট হচ্ছে তিনটি প্লেটের সংযোগস্থল। এ কারণে যেকোনো সময় এখানে বড় ভূমিকম্প হতে পারে। কিন্তু কত দিন পরপর হবে, সেটা বলা যাবে না।
শনিবার এক দিনে ঘন ঘন ভূমিকম্পের প্রভাবে নগরের পাঠানটুলা ও দর্জিপাড়া এলাকায় দুটি ছয়তলা ভবন হেলে পড়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) ভবন দুটি পরিদর্শন করেছে।
ভবনের বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।