বাগেরহাটের মোংলায় করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আটদিনের কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ। বিধিনিষেধ নিশ্চিতে রোববার থেকে মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, গত তিনদিনে মোংলায় ১২০টি নমুনা পরীক্ষা করে ৭০ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার শতকরা ৭৩.৮০ ভাগ।
এর মধ্যে গত দুইদিনেই ৪৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এটিই ছিল সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এর মধ্যে বেশিরভাগ রোগীই মোংলা পৌর এলাকার হওয়ায় সেখানকার ১৪টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ রোগতত্ত্ব ও রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার (আইইডিসিআর) প্রতিনিধি দল সরেজমিন মোংলা পরিদর্শন করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসলে মোংলা উপজেলা অবরুদ্ধ করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে স্বাস্থ্য বিভাগ।
স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে রোববার সকাল থেকে মোংলা পৌরসভার প্রতিটি প্রবেশ পথে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। টহল দিচ্ছে পুলিশ। তবে মোংলা বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মুহাম্মদ মুসা জানান, তারা আগে থেকেই সতর্ক রয়েছেন। যে কোন পরিস্থিতিতেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চালিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার জানান, সম্প্রতি করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাচ্ছে। কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ ছাড়া সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, মাস্কের বাধ্যতামুলক ব্যবহার নিশ্চিত করা হচ্ছে। মাস্ক ছাড়া কাউকে পাওয়া গেলে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা করা হবে। পৌর শহরে প্রবেশ সীমিত করা হয়েছে। জরুরি পরিবহন ছাড়া কোনো যানবাহন ঢুকছে না। বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত আছে।
ইউএনও আরও জানান, ওষুধ ও জরুরি কৃষিপণ্যব্যতিত সকল দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। বাজার ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
তিনি আরও বলেন, নৌপথে আসা যাত্রীদের পৌর এলাকায় প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
বাগেরহাট সিভিল সার্জন কে. এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘গত চারদিনে মোংলায় আশংকাজনক হারে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। আমরা নিবিড়ভাবে দুইদিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করব। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসলে মোংলা উপজেলা জুড়ে সর্বাত্মক লকডাউনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে স্বাস্থ্য বিভাগ।’
বাগেরহাটে করোনা শনাক্ত মোট ১ হাজার ৫৯১ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছে ১ হাজার ৪০৬ জন; মারা গেছে ৪১ জন। চিকিৎসাধীন রয়েছে ১৪৪জন।